পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যানটি বসানো হল আজ ১০ ডিসেম্বর। সফল ভাবে এই স্প্যানটি বসানোর মধ্যদিয়ে দৃশ্যমান হল স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাণিজ্য গুরুত্ব বাড়বে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরার অর্থনৈতিক গুরুত্ব আরো বাড়বে। প্রসার ঘটবে যোগাযোগ ব্যবস্থার। পদ্মা সেতু এই জেলার ব্যবসা বাণিজ্য ও পর্যটনসহ অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সাতক্ষীরার ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকার সাথে ভোমরা বন্দরের দূরত্ব অনেক কমবে। ফলে কম সময়ের মধ্যে সব ধরনের মালামাল ঢাকায় পৌছাবে। সেকারনে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে বন্দরের উন্নয়ন ঘটবে। এই বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। আরো বেশী মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ফলে বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ বন্দরে রূপান্তরিত হবে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর।
ভোমরা বন্দরের ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী ও আমাদানিকারক আব্দুল গফুর সরদার বলেন, এখন একটি ট্রাকে পণ্য নিয়ে ঢাকায় যেতে ২/৩ দিন সময় লাগে। ফেরিতে জ্যাম হলে আরো বেশী সময় লেগে যায়। এতে করে পণ্য পরিবহনে আমাদানিকারকদের ট্রান্সপোর্ট খরচ বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে পণ্যের মূল্যের উপর। পদ্মা সেতু চালু হলে সাতক্ষীরার সাথে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নয়ন ঘটবে। অনেক কম সময়ের মধ্যে ভোমরা থেকে সারাদেশে পণ্য পরিবহন সম্ভব হবে। ফলে ব্যবসায়ীদের পরিবহণ খরচ অনেক কমে যাবে।
সাতক্ষীরা দীপ সী ফুড ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীনবন্ধ মিত্র বলেন, সাতক্ষীরা থেকে চট্রগ্রাম বন্দরে হিমায়িত চিংড়ি পরিবহনে অনেক সময় লেগে যায়। খরচও বেশি হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে অনেক কম সময়ের মধ্যে হিমায়িত চিংড়ি সাতক্ষীরা থেকে মোংলা ও চট্রগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এতে করে সময়ও কম লাগবে এবং পরিবহন খরচও অনেক কমে আসায় জেলার মৎস্য ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।
সাতক্ষীরা চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন পাল্টে যাবে। ভোমরা বন্দরের সাথে রাজধানী ঢাকা এবং বন্দর নগরী চট্রগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। সাতক্ষীরা থেবে হিমায়িত চিংড়ি সহজে চট্রগ্রাম বন্দরে পৌছাবে।
তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে কোলকাতার হলদিয়া বন্দরের সাথে ভোমরা হয়ে ঢাকার দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার কমে যাবে। ভোমরা বন্দর থেকে ৫/৬ ঘন্টার মধ্যে আমদানি পণ্য ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে পৌছে যাবে। ফলে পরিবহন খরম কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ভোমরা বন্দর ব্যবহারে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর দেশের এক নম্বর স্থলবন্দরে পরিণত হবে। সাতক্ষীরা জেলার অর্থনৈতিক গুরত্ব আরো বেড়ে যাবে বলে আমি আশা করি। তিনি সফল ভাবে পদ্মা সেতু নিমার্ণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।