পদ্মা সেতুতে ৩৯তম স্প্যান বসবে আজ শুক্রবার। এতে দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে সেতুর ৫ হাজার ৮৫০ মিটার। পদ্মা সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে বসানো বাকি আর মাত্র ৩টি স্প্যান।
বাকি থাকা ৩টি স্প্যানের মধ্যে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সেতুতে বসানো হবে ৩৯তম স্প্যান ‘টু-ডি’। সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া অংশে ১০ ও ১১ নং পিলারে বসানো হবে এটি। ৩৮তম স্প্যান বসানোর ৬ দিনের মাথায় ৩৯তম স্প্যানটি বসতে যাচ্ছে। তাছাড়া চলতি নভেম্বর মাসে এ নিয়ে সেতুতে মোট ৪টি স্প্যান বাসানোর কাজ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) রাতে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূলসেতু) দেওয়ান মো. আব্দুর কাদের জানিয়েছেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও কারিগরি জটিলতা না থাকলে স্প্যানটি বাসানো হবে। তিনি আরো জানান, স্প্যানটি পিলারে বাসানোর জন্য সম্পূর্ন প্রস্তুত। ক্রেনে তোলাসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি চলছে।
শুক্রবার সকাল ৮ অথবা ৯টার দিকে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন তিয়াইন-ই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩৭তম স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত পিয়ারে উদ্যেশ্যে রওনা হবে। কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে নির্ধারিত পিলার দুটির দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। ভাসমান ক্রেন এ দূরত্ব পারি দেওয়ার পর পরবর্তী প্রক্রিয়ায় কারিগরি সমস্যা না দেখা দিলে আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এদিনই স্প্যানটি বসিয়ে দেওয়া হবে। তবে বৈরি আবহাওয়া কিংবা কারিগরি জটিলতা তৈরি হলে স্প্যানটি বসানোর কাজ একদিন পিছিয়ে যেতে পারে।
সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূলসেতু) দেওয়ান মো. আব্দুর কাদের আরো জানিয়েছেন, ৩৯তম স্প্যানটি বসে গেলে বাকি থাকবে আর মাত্র ২টি স্প্যান বাসানোর কাজ। ডিসেম্বর মাসে ১১ ও ১২ নং পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে স্প্যান বাসানো ছাড়াও অন্যান্য কাজও এগিয়ে চলছে। এরমধ্যে সেতুতে ১ হাজার ৮৪৮টি রেলওয়ে ও ১ হাজার ২৩৮টি রোড ওয়েস্ল্যাব বসানো হয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৮টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫ হাজার ৭০০ মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/কেএম