নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বনি মোল্লা (৩০) হত্যা মামলায় ২৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। এ মামলায় চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরে খুলনা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আহাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে একজন পলাতক রয়েছেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, নড়াইলের কালিয়ার মৃত জালাল বিশ্বাসের ছেলে মফিজ বিশ্বাস (৪০), আবু শেখের ছেলে আলাম শেখ (৩৯), আবু শেখের ছেলে আঃ সালাম শেখ(৪২), বাচ্চু খাঁ’র ছেলে শরিফুল খাঁ (৪৪), বাচ্চু খানের ছেলে মামুন খান(৩৯), সিদ্দিক শিকদারের ছেলে আশিক শিকদার(৩৩), সিদ্দিক শিকদারের ছেলে সোহেল শিকদার(২৭), সালাম শেখের ছেলে সবুজ শেখ (২২), মহিদ মোল্লার ছেলে সবুজ মোল্লা(৩২), খোকন মোল্লার ছেলে খালিদ মোল্লা (২৬, মৃত. সালাম মোল্লার ছেলে খোকন মোল্লা(৫৫), মৃত. সালাম মোল্লার ছেলে কিবরিয়া মোল্লা (৫০), সালাম শেখের ছেলে সাদি শেখ (১৮), তোকাম শেখের ছেলে আহাদুল শেখ (২৩), তোকাম শেখের ছেলে ইমদাদ শেখ(২৭), ওহাব মোল্লার ছেলে শরিফুল মোল্লা (৫৩), আজিবর শেখের ছেলে (পলাতক) বাপ্পি শেখ (৩৪), মৃত. রসুল খাঁ’র ছেলে সুফিয়ান খাঁ (৪৩), মৃত. রসুল খাঁ’র ছেলে আশরাফুল খাঁ (৩৭), মৃত. ওহাব মোল্যার ছেলে রুনজু মোল্যা (৩৮), মৃত. শাহাদাত খাঁ’র ছেলে দুলাল খাঁ (৫০), দুলাল খানের ছেলে শিপলু খান ওরফে পিকুল খান (২৩), জিল্লাহ তালুকদারের ছেলে উচ্চল তালুকদার (৩৭), জাহাঙ্গীর মোল্যার ছেলে আশিক মোল্যা (২৩) ও মৃত. আবুল শেখের ছেলে মো. আমজাদ শেখ (৩৭)।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, রাশেদ মোল্যার ছেলে বাবু মোল্লা(২৭), ইকলাজ মোল্যার ছেলে রকিবুল মোল্যা(৩৫), মজিদ শেখের ছেলে মো. মিলন শেখ (৩৮) ও মৃত. আব্দুল মোল্যার ছেলে সেলিম মোল্যা (৫২)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার মোঃ হাসিম মোল্লার ছেলে বনি মোল্লাকে গ্রামে পূর্ব শত্রুতা ও মামলা মোকাদ্দমার কারণে খুন করা হয় । তিনি পারিবারিক জায়গা-জমির ওপর ঘেরের দেখাশুনা করতেন। ২০১৯ সালের ১১ মে তিনি বাসার পাশের একটি ঘেরে অবস্থান করছিলেন। সকাল ৮টার দিকে তার পূর্ব পরিচিত সন্ত্রাসীরা দেশি তৈরী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে তিনি দৌড়ে প্রতিবেশী ছাকু কাজীর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সন্ত্রাসীরা ওই বাড়ি থেকে বের করে তাকে এলোপাতড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনার পর বনি মোল্লার বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার দুইদিন পরে নিহতের পিতা বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত চলাকালে এ মামলায় আরও দু’জনের নাম অন্তভুক্ত করা হয় বলে পুলিশের দাবি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ইকরাম হোসেন ২০২০ সালের ১৫ মার্চ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি চার্জশীট দাখিল করেন। মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়। এ মামলার দুইজন আসামির বিচারকার্য শিশু আদালতে চলছে।
খুলনা গেজেট/এনএম