১১ দফা দাবিতে পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিক ধর্মঘটের পাল্টায় মালিকরা ছয দফা দাবি তুলে ধরে বলছেন, অযৌক্তিক দাবি মেনে জাহাজ চালানো সম্ভব নয়। মঙ্গলবার বিকালে বিজয় নগর আকরাম টাওয়ার বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সভা কক্ষে এই দাবি তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ধর্মঘট পালন করার উপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও রিট মামলায় খাদ্য ভাতার উপর নিষেধাজ্ঞা বিষয়টি সকল পক্ষকে মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। শ্রমিকরা তা উপেক্ষা করে ধর্মঘট করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনটি সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল হক বলেন, “যেখানে করোনা ভাইরাসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী কর্মকর্তা ছাঁটাই করা হচ্ছে বেতন অর্ধেক করা হচ্ছে। সে সময় এ ধরনের অযৌক্তিক দাবি তুলে ধরে অরাজকতার পিছনে কারো ষড়যন্ত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, মহামারীর মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পুরোপুরি দেওয়া যাচ্ছে না। তার মধ্যেই এভাবে খাদ্য ভাতার অযৌক্তিক দাবি তুলে ধরা হলে মালিকরা নিরুপায়। ধর্মঘট প্রত্যাহার করে একটি কমিটির মাধ্যমে এবং রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করে আলোচনায় বসতে হবে।
কিছু কিছু কোম্পানির মালিক খাদ্য ভাতা দিতে রাজি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওইসব কোম্পানির জাহাজ সিরিয়াল না ধরে মাসে চার থেকে পাঁচটি ভাড়া নেয়। তাদের আয় বেশি। কিন্তু আমরা সিরিয়াল ধরে তিন মাসে একটি ভাড়া পাই।”
বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের অধীনে পাঁচ হাজার জাহাজ রয়েছে জানিয়ে নুরুল বলেন, যেসব কোম্পানি শ্রমিকদের খাদ্য ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তারা এ সংগঠনের অধীনের নয়।
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা পণ্যবাহী জাহাজ মালিকদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে-
>>ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) নীতিমালা উপেক্ষা করে চলাচলরত সিরিয়াল বিভিন্ন জেলায় কর্মরত শ্রমিকদের কম্পিউটার সার্টিফিকেট বাতিল করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
>>শ্রমিক নামধারী কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী কর্তৃক জোরপূর্বক স্বাভাবিক জাহাজ চালানোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নৌপথে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
>>সরকারি গেজেট মোতাবেক ২০২১ সাল পর্যন্ত শ্রমিক সংগঠনের অবৈধ দাবি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
>> নৌযান শ্রমিকদের সাহায্যে সার্ভিসটি বিভিন্ন অবৈধ জাহাজ চালানো বন্ধ করতে হবে।
>>সমুদ্রে বহির্নোঙ্গর হতে অবৈধ বাল্কহেডের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন বন্ধ করতে হবে।
এসব দাবি পূরণ না করা হলে মালিকদের পক্ষে জাহাজ চালানো সম্ভব নয় বলে তারা দাবি করেন।সংগঠনটির সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম সারোয়ার আলমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এনএম