খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪
  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত
  জুলাই গণহত্যা : ৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ

নৌপথে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

গে‌জেট ডেস্ক

ঈদুল আজহা উদযাপন করতে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। শুক্রবার (৮ জুলাই) নৌপথে ফেরা যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে, যা গতকালে তুলনায় কয়েক গুণ। অতিরিক্ত এসব যাত্রীর চাপ সামাল দিতে বিশেষ লঞ্চ চালু করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে হাজারো মানুষের ভিড়। ঈদ এলেই ভোগান্তির মধ্য দিয়েই এ আনন্দযাত্রা শুরু হয় মানুষের। যারা বাসে চড়েন, তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় মহাসড়কে। তাই নদীপথ আরামদায়ক হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে হলেও লঞ্চই তাদের প্রিয় বাহন। তবে যাত্রীদের কয়েকজন ছাড়া কারও মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি।

এদিকে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাঁদপুর প্রশাসন নিয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। ঘাটে রয়েছে নৌ পুলিশের ভ্রাম্যমাণ দল। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে লঞ্চঘাটে পুলিশের সঙ্গে কাজ করছেন কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও স্কাউট সদস্যরা।

যাত্রীদের হয়রানিমুক্ত রাখতে বারবার মাইকিং করছে প্রশাসন। কিন্তু লঞ্চ থেকে যাত্রীরা নামার সঙ্গে সঙ্গেই সিএনজি, অটোরিকশার চালকরা যাত্রীদের লাগেজ ধরে টানাটানি করছেন। পুলিশ সদস্যরা এসে তাদের নিবৃত করছেন। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।

যাত্রীদের অভিযোগ, তাদের জিম্মি করে চালকরা ভাড়া নিচ্ছেন কয়েক গুণ বেশি। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাত্রীদের অনেকে। কয়েকজন যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের জন্য গ্রামের বাড়িতে এসেছি। কিন্তু ঘাটে নামার পর ড্রাইভাররা কয়েক গুণ ভাড়া চেয়ে আমাদের জিম্মি করে।

ঢাকা থেকে আসা লঞ্চযাত্রী মো. শামীম বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি আসছি। কিন্তু লঞ্চঘাটে ইজিবাইক ও সিএনজি অটোরিকশার চালকরা ভাড়া দ্বিগুণ চাচ্ছেন। তারা ১০০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা চান।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা লঞ্চযাত্রী রাশিদা বলেন, অনেক জায়গায় ঘাট পরিবর্তন করে এসেছি। আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে। টার্মিনালে প্রচুর ভিড়। সে জন্য ঝুঁকি নিয়ে অন্য লঞ্চের ভেতর দিয়ে বের হয়ে এসেছি।

একটি লঞ্চের স্টাফরা বলেন, আমরা আমাদের জাহাজগুলোর ওয়াটার লেভেল ক্রস করার আগেই যে যাত্রী পেয়েছি, তা নিয়ে সরকারের নির্দেশনা মেনে ছেড়ে এসেছি। লঞ্চগুলোয় যে পরিমাণ যাত্রী ধারণক্ষমতা, আমরা সে পরিমাণ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে এসেছি।

চাঁদপুর নদীবন্দরের পরিদর্শক মো. শাহ আলম ও কোস্টগার্ডের দায়িত্বরত কর্মকর্তা পলাশ বলেন, যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ নেই। আমরা বেশ কিছু রিজার্ভ লঞ্চ দিয়ে যাত্রীদের পারাপারের ব্যবস্থা করেছি। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

চাঁদপুর নৌ পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে মানুষ যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে, সে জন্য নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। লঞ্চঘাটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লঞ্চঘাটজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কোনো যাত্রী অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন, যাত্রীসেবায় আমরা ঘাটে মনিটরিং করছি। সুস্পষ্টভাবে কোনো অভিযোগ পেলেই জরিমানা করা হচ্ছে।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাসির উদ্দিন সারোয়ার মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে জানান, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ, রোভার স্কাউটস, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও পৌরসভার সমন্বয়ে লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তায় এরই মধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, নিয়মিত লঞ্চের বাইরেও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে বিশেষ লঞ্চ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। কোনো যাত্রীকে জিম্মি করে কোনো রুটে যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে, সেই বিষয়ে আমরা সজাগ আছি।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!