খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭
  ভারতীয় সব বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি বুধবার
খুলনার ৬টি আসন

নৌকার বিপক্ষে নামসর্বস্ব ৮টি দল, ২৯ প্রার্থীর ২১ জনই নতুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা-৫ আসনের টানা ৩ বারেরর নির্বাচিত সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ছিলেন মন্ত্রীও। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে হেভিওয়েট এই প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বি ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ সেলিম আকতার ও জাকের পার্টির সামাদ শেখ। তাদের দু’জনেরই এবার প্রথম নির্বাচন। এলাকায় তাদের পরিচিতিও কম। এলাকার মানুষ বলছেন, নাম সর্বস্ব দলের এসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নারায়ণ চন্দ্রের জয় শুধু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

খুলনার অন্য পাঁচটি আসনেও অভিন্ন ছবি। নির্বাচনে ১০টি দল অংশ নিলেও ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগ ছাড়া প্রার্থী দিতে পারেনি অন্য কোনো দল। জাকের পার্টি পাঁচটি আসনে, জাতীয় পার্টি চারটি আসনে এবং নামসর্বস্ব অন্য সাতটি দল কয়েকটি আসনে বিচ্ছিন্নভাবে প্রার্থী দিয়েছে। আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য দলের প্রার্থীদের এলাকায় তেমন পরিচিতি নেই। এলাকার মানুষ অনেকের নামও শোনেননি।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুলনার ছয়টি আসনে ২৯ প্রার্থীর মধ্যে ২১ জনই প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। গেল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্য আটজনের পাঁচজনই জামানত হারিয়েছিলেন। আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের শক্ত বিদ্রোহী প্রার্থীও নেই। এ পরিস্থিতিতে খুলনার ছয়টি আসনে অনেকটাই নির্ভার আওয়ামী লীগ।

এসব কারণে সংসদ নির্বাচনে গ্রামগঞ্জ, পাড়া-মহল্লায় যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়, এবার তা হয়নি। নৌকার প্রার্থীদের নির্বাচিত হওয়া সময়ের অপেক্ষা হওয়ায় ভোট নিয়ে উৎসাহ নেই ভোটারদের। মাঠে শুধু আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও নেতাকর্মীর তৎপরতা দৃশ্যমান। এবার যারা আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তৎপরতা অন্যদের তুলনায় বেশি।

এ ব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটি খুলনার সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনে আসেনি। খুলনার আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের ধারেকাছে অন্য কোনো দল কেউ। অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন না হলে মানুষের আগ্রহ থাকবে না– এটাই স্বাভাবিক।

তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী এস এম কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচন নিয়ে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমি যেখানেই যাচ্ছি, মানুষের ঢল নামছে। উৎসাহ না থাকলে এত মানুষ আসত না। তিনি বলেন, নির্বাচনী উৎসব শুরু হয় প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর। প্রচারণা শুরু হলে উৎসব দৃশ্যমান হবে।

ভোটের হিসাব আকাশ-পাতাল

খুলনার ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগের পরিচিত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এবার ভোটের মাঠে রয়েছে জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টি। এবারের নির্বাচনে পাঁচটি আসনে জাকের পার্টি এবং চারটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগ, তিনটি আসনে জাতীয় পার্টি ও চারটি আসনে জাকের পার্টি প্রার্থী দিয়েছিল। ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওই নির্বাচনে দল দুটির সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ভোট পেয়েছিল ৭ হাজার ২৭৬টি, যা মোট ভোটের শূন্য দশমিক ৮৯ শতাংশ। চারটি আসনে জাকের পার্টি ভোট পেয়েছে ১ হাজার ৪৪০টি, যা মোট ভোটের শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ। বিপরীতে ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভোট পেয়েছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩৫টি, যা প্রদত্ত ভোটের ৮৪ শতাংশ।

নামসর্বস্ব দল, ২৯ প্রার্থীর ২১ জনই নতুন

খুলনার ছয়টি আসনে ১০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। দলগুলোর মধ্যে প্রার্থী রয়েছে– আওয়ামী লীগের ৬, জাতীয় পার্টি ৪, জাকের পার্টি ৫, বিএনএম ৩, বাংলাদেশ কংগ্রেস ২, তৃণমূল বিএনপি ২, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ১, গণতন্ত্রী পার্টি ১, এনপিপি ২ এবং ওয়ার্কার্স পার্টি একটি আসনে।

২৯ প্রার্থীর মধ্যে ২১ জনই এবারই প্রথম ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তাদের চেনেন না এলাকার ভোটাররা। এর আগে ভোটে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের ননী গোপাল মণ্ডল, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, আবদুস সালাম মুর্শেদী ও নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

নির্বাচনে অংশ নিয়েও জামানত হারান জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন, শেখ আনছার আলী, শেখ মত্তুর্জা আল মামুন ও মির্জা গোলাম আজম। খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মো. রশীদুজ্জামান মোড়ল ১৯৯১ সালে সিপিবির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। ওইবার তিনিও জামানত হারান।

 

খুলনা গেজেট/হিমালয়




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!