নেত্রকোণার মদনে হাওরে ঘুরতে গিয়ে প্রাণ হারালেন একই পরিবারের ৮ জনসহ ১৭ জন। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে একজন। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে এ দুর্ঘটনা বলে জানিয়েছেন বেঁচে ফেরা যাত্রীরা।
ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে হাওরে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন ময়মনসিংহের চরসিরতা ইউনিয়ের মারকাযুস সুন্নাহ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান। সঙ্গে নেন দুই ছেলে, দুই ভাতিজা, দুই জাতিজি ও ভাগ্নেকে।
বুধবার (৫ আগস্ট) সকালে নেত্রকোণার উচিতপুর ঘাট থেকে পরিবারের ৮ জনসহ ৪৮ জন একটি ট্রলার ভাড়া করেন। দুপুর ১টার দিকে গোবিন্দশ্রীর রাজালীকান্দা এলাকায় উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। জীবন বাঁচাতে সাঁতরে ৩০ জন তীরে উঠলেও, মাহফুজুর রহমান ও তার পরিবারের ৭ জনসহ প্রাণ হারান ১৭ জন।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, ট্রলারটিতে ২০ থেকে ২৫ জন যাত্রী পরিবহণে সক্ষম হলেও, সেখানে প্রায় অর্ধশত যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। যে কারণেই এই দুর্ঘটনা।
নিহতদের মধ্যে ১৫ জন ময়মনসিংহ সদরের চরসিরতা ইউনিয়নের ভবানীপুর, কোনাপাড়া, খরিচা ও গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। বাকি দুজন নেত্রকোণার মদন উপজেলার। এ ঘটনায় নিখোঁজ রাকিবের বাড়িও কোনাপাড়া গ্রামে। এদিকে ঘটনার পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে ওই এলাকায়।
নিহতরা হলেন: মাদরাসায়ে মারকাজুস সুন্নাহ’র মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুর রহমান (৪৫), তার ছেলে হাফেজ মাহবুবুর রহমান আসিফ (১৫) ও মাহমুদুর রহমান (১২), ভাতিজা কোনাপাড়া গ্রামের ফজর আলীর ছেলে জোবায়ের (২২) ও মুজাহিদ মিয়া (১৭), ভাগিনা একই গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম (১৬) ও মোবাইল ব্যবসায়ী জাহিদ (২০), চরখরিচা গ্রামের কৃষক ইসা মিয়া (৪০) ও তার ছেলে শামীম (১০), কোনাপাড়া গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম (৩৮), ইদ্রিস আলীর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক হামিদুল (৩৫), আব্দুর রশিদের ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক সাইফুল ইসলাম রতন (৩০), লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক জহিরুল ইসলাম (৩৫), কোনাপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক রাকিব (২০) ও চরগোবিন্দপুরের তালেব মেম্বারের ছেলে শহিদুল (৪০) এবং গৌরীপুর উপজেলার ধোপাজাঙ্গালিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে শফিকুর রহমান (৪০) ও তার ছেলে সামাআন (১০)।
খুলনা গেজেট / এমএম