নোয়াখালীতে এক ইউপি সদস্য ও এক প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জেলার হাতিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রবীন্দ্র চন্দ্র দাসকে (৪০) বুধবার (৯ জুন) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চর ঈশ্বর এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। অপরদিকে, সুবর্ণচর উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে কামাল উদ্দিন (৩৮) নামে এক প্রবাসীকে কুপিয়ে মারাত্নক জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে বুধবার রাত ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে কুমিল্লায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত রবীন্দ্র চন্দ্র দাস হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সতীশ চন্দ্র দাসের ছেলে।
নিহতের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন মুহিন বলেন, গতকাল রাত আড়াইটায় চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাংলাবাজার এলাকায় সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে, জেলার সুবর্ণচর উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে কামাল উদ্দিন (৩৮) নামে এক প্রবাসীকে কুপিয়ে মারাত্নক জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এসময় ওই প্রবাসীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। বুধবার রাত ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে কুমিল্লায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জড়িত ইসমাল ও আবুল কালাম নামে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত কামাল উদ্দিন চরওয়াপদা ৬নং ওয়ার্ড চরকাজী মোখলেস গ্রামের ওবায়দুল হক ওদু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী কামাল উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে একই এলাকার মৃত সফি উল্যার পরিবারের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল।
বুধবার দুপুর ২টার দিকে কামাল উদ্দিন মোটরসাইকেল নিয়ে স্থানীয় মালেকের দোকান এলাকায় তেল নেওয়ার জন্য আসে। এসময় পিছন থেকে তার ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষরা। হামলাকারীরা কামালের শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কামাল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা স্ক্রড্রাইভার দিয়ে কামালের চোখে আঘাত করে। কামালকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে কালু মিয়া নামের একজনকেও কুপিয়ে জখম করে তারা।
কামালের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন কামালকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে কুমিল্লায় কাছে মারা যান তিনি।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের অত্যাচারে এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করলে হামলার শিকার হতে হয়।
চরজব্বার থানার ওসি মো. জিয়াউল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে এ হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ইসমাইল ও আবুল কালাম নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই