খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
  শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২

নোনাজলে আনন্দে ভাসছে উপকূলে জন্মানো কাছিম ছানা

গেজেট ডেস্ক 

কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে জন্ম নিয়েছে অগণিত কাছিমের ছানা। সমুদ্রের নোনাজলের ছোঁয়া পেয়েই যেন আনন্দে আত্মহারা ছানাগুলো। সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ইউএসএইডের অর্থায়নে ও নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) পরিচালনায় ইকো লাইফ প্রোগ্রামের আওতায় কক্সবাজারে ১৮৫টি অবমুক্ত করা হয় পরিবেশ বন্ধু কাছিমের বাচ্চা। যার মধ্যে পেঁচার দ্বীপে সমুদ্র সৈকতে ৬৫টি এবং উত্তর সোনার পাড়ায় ১২০টি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার, ইউএসএইডের নেকম ইকো লাইফ প্রোগ্রামের ডিপিডি ড. শফিকুর রহমান, হিমছড়িসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট অয়াছুর রহমান, নেকমের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা (এনআরএম) ম্যানেজার মো. আব্দুল কাইয়ুম, সাইট অফিসার মোজাহারুল আলম, হিমছড়ির বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান শোভন, লাইভলিহুড ফেসিলিটেটর সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

নেকমের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা (এনআরএম) ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে অলিভ রিডলি জাতের কচ্ছপ সৈকতে ডিম দিয়ে আসছে। কক্সবাজারের ৫টি হ্যাচারিতে ডিমগুলো সংগ্রহ করে নেকম। এসব ডিম হ্যাচারিতে বৈজ্ঞানিক প্রদ্ধতিতে রেখে বালুর নিচে বিশেষ কায়দায় ফুটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ডিমগুলো ফুটে বাচ্চা বের হয়। রোববার বিকেলে দক্ষিণ বনবিভাগের ইনানীর উত্তর সোনারপাড়া হ্যাচারিতে ১২০টি ও পেঁচারদ্বীপ হ্যাচারিতে ৬৫টি বাচ্চা বালুর নিচ থেকে উঠে আসে। এসব বাচ্চা সোমবার দুপুরে সাগরে অবমুক্ত করা হয়।

হিমছড়িসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, কাছিমের জন্য হুমকি বা বিপদগুলো হলো শিয়াল, কুকুর, গুঁইসাপসহ বিভিন্ন আদিবাসীরা এর ডিম খেয়ে থাকে। এ ছাড়া যত্রতত্র চিংড়ি হ্যাচারি ও হোটেল-মোটেলের আলো কাছিমের ডিম পাড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিনিয়ত সমুদ্রের পানির উচ্ছতা বৃদ্ধি পেয়ে ভেঙে যাচ্ছে কাছিমের ডিম পাড়ার ক্ষেত্রে সমুদ্রের সৈকত।

তিনি আরও বলেন, সরকারের পাশাপাশি সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ইসিএ কমিটি কাছিমসহ জীববৈচিত্র সংরক্ষণে কাজ করছে।

নেকমের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ড. শফিকুর রহমান বলেন, সামুদ্রিক কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ ও প্রজনন প্রক্রিয়ার তদারকি করে নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট। বেশ কয়েকবছর ধরে সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার সৈকত থেকে কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ করছে সংস্থাটি। সেন্টমার্টিনে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। কক্সবাজার অংশে সংগ্রহ হয়েছে ৪৮টি ক্লাচ থেকে প্রায় ৬ হাজার। দুই মাস পর ডিমগুলো থেকে বাচ্চা বের হয়। পরে বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করা হয়। হ্যচারিতে বাচ্চা ফোটানোর এ পদ্ধতিকে বলে এক্স-সিটু সংরক্ষন এবং প্রাকৃতিকভাবে যেখানে ডিম পাড়ে সেখানে রেখে ফোটানোকে বলে ইন-সিটু সংরক্ষণ নেকম এই দুই পদ্ধিতিই অবলম্বন করছে।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম বলেন, কচ্ছপ প্রকৃতির সুইপার। সমুদ্রের আবর্জনাগুলো ভক্ষণ করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে কচ্ছপ। কিন্তু আমাদের অসচেতনতায় নিজের আবাসস্থল হারাচ্ছে এ উপকারী প্রাণীটি। নিষিদ্ধ জালে মাছ শিকারকালে আটকা পড়ে মারা যায় কচ্ছপ। পর্যটন বিকাশের কারণে কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূলে অতিরিক্ত আলোকায়নে কূলে ফিরে কুকুরের আক্রমণেও মরছে কচ্ছপ। এসব নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হলেও আমরা কচ্ছপ প্রজননে গুরুত্বারোপ করছি।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!