খুলনায় গত ১৩ দিন ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে বিএনপি কার্যালয়। গ্রেপ্তার এড়াতে দলীয় কার্যালয়মুখী হচ্ছে না বিএনপির নেতাকর্মীরা। নাশকতার নতুন ও পুরানো মামলায় গত ১২ দিনে গ্রেপ্তার হয়েছে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী। গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তবে পুলিশ বলছে, নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, নিরীহ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। আর দলীয় কার্যালয়ে তারা তালা দেয়নি।
বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং কারফিউ পরিস্থিতিতে তারা বিপাকে পড়েছেন। গত ১৭ জুলাই পুলিশ নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের ২ জন পিওনকে তালা লাগিয়ে বেরিয়ে যেতে বলেন। তখন তারা তালা লাগিয়ে চলে যায়। এরপর থেকে দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ রয়েছে।
তাদের অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। গেলেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের আশংকা রয়েছে। এমনকি দলীয় কার্যালয়ের পাশের চায়ের দোকানগুলোতে এসেও পুলিশ খোঁজাখুঁজি করছে। নাশকতার নতুন ৩ মামলা এবং পুরানো মামলায় এ পরযন্ত শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। রাতে অসংখ্য নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
মহানগর বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, গত শুক্রবার পুলিশ সদস্যরা মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনার মুন্সিপাড়া এলাকার বাসভবনে যান। তিনি বাড়িতে নেই জানানোর পরও তারা দরজা ভেঙে ফেলেন। পরে গ্রিল কাটার মেশিন দিয়ে গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করেন। তাকে না পেয়ে তারা পুলিশ লাইন এলাকায় অবস্থিত মনার শ্বশুর বাড়িতে যান। পুলিশ ওই বাড়িরও দরজা ভেঙে ফেলে বলে বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়।
তবে খুলনা থানার ওসি কামাল হোসেন খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নাশকতা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হয়েছে। ভাংচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে রাতে বাড়িতে থাকছেন না স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী। অনেকে মোবাইল নম্বরও পরিবর্তন করে ফেলছেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী অভিযোগ করে বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে খুলনায় আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। অথচ পুলিশ নাশকতার ৩ মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে। ফলে দলের নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
তবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, কোটা সংস্কারের আড়ালে যারা নাশকতা করেছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নিরীহ কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হচ্ছে না।
খুলনা গেজেট/হিমালয়