শীতকালে ঠান্ডার ভয়ে অনেকেই নিয়মিত গোসলের ধারে কাছে ঘেঁষতে চান না। কেউ কেউ শুধু হাত মুখ ধোয়ার জন্য পানির সাথে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখেন। আবার অনেকেই আছেন যারা গোসল করলেও বেশ গরম পানি দিয়ে গোসল করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নিয়মিত গরম পানিতে গোসল সম্পর্কে রয়েছে নানা জনের নানা মত।
যাদের বুকে ব্যাথা ও শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য গরম পানিতে গোসল বেশ উপকারী। এছাড়া যাদের নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ও ভাল। গরম পানিতে গোসলের পর শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে। সেই সঙ্গে পেশির ক্লান্তি দূর হয়। তাই সারাদিনের কর্মব্যস্ততার চাপ কাটিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কুসুম গরম পানিতে গোসল করে নিতেই পারেন।
তবে নিয়মিত গরম পানিতে গোসল করা কি ঠিক? ঠিক হলেও কতটা গরম হবে সেই পানি। জেনে নিন নিয়মিত গরম পানিতে গোসলের অপকারিতা।
বস্টন ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, শুষ্ক আবহাওয়ায় নিয়মিত গরম পানিতে গোসল করার ফলে ত্বক তার আদ্রতা দ্রুত হারিয়ে ফেলে। এছাড়া প্রতিদিন গরম পানিতে গোসল করার কারণে হজমের ও নানান সমস্যা হতে পারে। বেড়ে যেতে পারে কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যা।
আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে, গোসলের সময় শরীরে গরম পানি ব্যবহার করলেও মাথায় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে। কারণ গরম পানি আমাদের চুল ও চোখের জন্য ক্ষতিকর। ছেলেরা দীর্ঘ সময় গরম পানিতে গোসল করলে সন্তান হওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ এমন অভ্যাসের কারণে ফার্টিলিটি কমে যায়। তাই ছেলেদের উচিত ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা।
একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, প্রচন্ড ঠান্ডার সময় গরম পানি দিয়ে গোসল করলে হঠাৎ করে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও বাড়ে। তাই যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তারা ভুলেও গরম পানিতে গোসল করবেন না।
এসকল কারণে অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডাও নয় বরং সহনীয় পর্যায়ের আরামদায়ক উষ্ণ গরম পানিতে গোসলের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি ঘটে এবং অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর হয়। শীতকালীন সর্দি কাশি উপসর্গ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। ভালো ত্বক এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য গোসলের পানিতে কয়েকটি নিম পাতা রাখা যেতে পারে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি