গণশুনানির মাধ্যমে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি)। আজ মঙ্গলবার এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে একটি গেজেট জারি করা হয়েছে। গেজেটে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ৩৪ (ক) বিলুপ্ত করে অধ্যাদেশ জারি করার কথা জানানো হয়।
এখন থেকে এটি ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৪’ নামে অভিহিত হবে। এই আইনের ৩৪-এর ‘ক’ ধারা অনুযায়ী,‘ ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয়ের ক্ষমতা সরকারের। এই ধারা বিলুপ্ত হওয়ায় এখন থেকে গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হবে।
বিইআরসি’র সচিব (যুগ্মসচিব) ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান খান জানান, এতে করে যে কারণে রেগুলেটরি কমিশন গঠন করা হয়েছে তা পুরোপুরি কার্যকর হবে। দাম নির্ধারণের জনগণের সম্পৃক্ততা থাকবে। তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে দাম নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া, সেটি আবার ফেরত এল। জনগণের ক্ষমতা আবার জনগণের কাছে ফেরত এল।
তিনি আরও বলেন, সব পর্যায়ের ভোক্তা এবং অংশীজনের সমন্বয়ে এখন থেকে শুনানি হবে। শুনানিতে তাদের পরামর্শ, মতামত, অভিযোগ আমলে নিয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি দাম নির্ধারণ হবে। আগে এই কার্যক্রম শেষ করতে ৯০ দিন সময় লাগতো পরে তা কমিয়ে ৬০ দিন নির্ধারণ করা হয়। সেটিকে আমরা ৩০ দিন বা আরও কম সময়ের মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করব।
গত ২২ আগস্ট উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে আইনটি সংশোধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে ২০২২ সালের পহেলা ডিসেম্বর গণশুনানি ছাড়াই বিশেষ পরিস্থিতিতে সরাসরি জ্বালানির দাম সমন্বয় করার বিধান করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন-২০০৩ সংশোধন করে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বরে গণশুনানি ছাড়াই জ্বালানির দাম সমন্বয়ের বিধান রেখে আইন সংশোধনের অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তখন বলা হয়েছিল, জ্বালানির দাম নির্ধারণে বিইআরসিকে গণশুনানি করতে হয়। এতে ৯০ দিন সময় লাগে। তাই দ্রুত বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর ক্ষমতা সরকারের হাতে নেওয়ার কথা বলা হয়। পরে জাতীয় সংসদে ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন), বিল পাস হয়।
গত ১৮ আগস্ট বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়োজন হলে আবারও বিইআরসি আয়োজিত গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, বারবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তাই দুর্ভোগ বাড়বে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। বাধ্য না হলে আমরা দাম বাড়াব না। প্রয়োজনে কমিশন সবার সঙ্গে কথা বলে নীতিমালা অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নেবে।
খুলনা গেজেট/কেডি