বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ভোটের মাঠে আছি, চোরের মাঠে নেই। এই সরকারের অধীনে বিএনপি ভোটে যাবে না।
সার্চ কমিটি, কমিশন সবই সহযোগি চোর বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আসল চোরকে ধরতে হবে। সকল দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সরকারের দুর্নীতির কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) খুলনায় মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা নেই, দায়বদ্ধতা নেই বলেই দফায় দফায় পানি, তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। এই সরকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া জনগণের হারানো অধিকার সমূহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবেনা। আর তাই এদের হঠাতে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ করে চূড়ান্ত আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান তিনি।
চাল, ডাল, তেল, গ্যাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা। বিকেলে নগরীর কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে চত্বরে কর্মসূচি পালিত হয়।
আমির খসরু বলেন, দুর্নীতি আর লুটপাটের বদৌলতে সরকার ও তার অনুসারীরা ফুলেফেপে বড়লোক হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা প্রতিনিয়ত কমছে। নূন্যতম পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহ করতে পারছেনা অধিকাংশ পরিবার। সরকার যখন মধ্যম আয়ের দেশের মিথ্যা দাবি তুলছে, সেই সময় একটি প্রজন্ম বেড়ে উঠছে প্রয়োজনীয় পুষ্টিচাহিদা পূরণ না করে। তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সরকার জনগণের পকেট কাটছে, আর সরকারি সিন্ডিকেট মুনাফা লুটে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে জনজীবনে নাভিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। কিন্ত জনদূর্ভোগ লাঘবে সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই। কারণ তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। তারা অবৈধ ভাবে দখলদারির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয় দাবি করে তিনি সকল গণতান্ত্রিক পক্ষ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চুড়ান্ত আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহারুজ্জামান মোর্তুজা, রবিউল ইসলাম রবি, যুবদল নির্বাহী সংসদের সিনিয়র সহ সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু। সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, জেলা সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী, মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো: তারিকুল ইসাম জহির, জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু।
সমাবেশে মহানগর ও জেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন। দুপুরের পর থেকেই মিছিল আসতে থাকে সমাবেস্থলে। স্বল্প সময়ের মধ্যে কানায় কানায় ভরে যায় কর্মসূচিস্থল। কে ডি ঘোষ রোড ছাড়াও আশেপাশের রাস্তায় বিপুল সংখ্যক মানুষ দাঁড়িয়ে বক্তব্য শোনেন। এ সময় সেখানে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
খুলনা গেজেট/ এস আই