দুর্ঘটনাকবলিত হয়েছে একটি বাস, গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরেকটি বাসের হেলপারকে। এমন অভিযোগ ঝিনাইদহ বাস মালিক সমিতির নেতাদের। এ বিষয়ে মঙ্গলবার ( ৮ জুন) সমিতির এক জরুরী সভাশেষে পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি। এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে ক্লোজ করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে গ্রেপ্তার করা হেলপার ঘটনার দিন ওই বাসটিতেই দায়িত্ব পালন করছিল, আর তদন্ত কর্মকর্তার বদলী স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
জানা গেছে, গত ১৯ মে রাত ৮টার দিকে ঝিনাইদহ-হরিণাকুন্ডু সড়কের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর জামতলা নামক স্থানে এসপি পরিবহনের একটি বাসের (যার নং পাবনা-জ-১১-০০২২) চাঁকায় পিষ্ট হয়ে উপজেলার হামিরহাটি গ্রামের আক্তার হোসেন ও চাঁদপুর গ্রামের তালেব আলী নামে দুই ব্যক্তি নিহত হন। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের সংশোধিত সড়ক আইনে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হরিণাকুন্ডু থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান পুলিশের উপ-পরিদর্শক শামীম হোসেন।
জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ওলিয়ার রহমান জানান, দুর্ঘটনাকবলিত হয়েছিল এসপি পরিবহনের বাস। অথচ সেই বাসের চালক বা হেলপারকে গ্রেপ্তার না করে লস্কর পরিবহন নামে অন্য একটি বাসের হেলপার হরিণাকুন্ডু উপজেলার বলরামপুর গ্রামের শফি চৌধুরীর ছেলে চান্নু মিয়াকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা এই দুর্ঘটনার সাথে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার না করে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করে ও নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানি বন্ধে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান বাস মালিক সমিতির এই নেতা।
এদিকে আব্দুল মান্নান নামে এক বাসচালক বলেন, ‘আমি বদলী চালক হিসেবে দুইদিন ওই বাসটি চালিয়েছিলাম। তবে যেদিন ওই বাসটি দুর্ঘটনাকবলিত হয় সেদিন আমি ছিলাম না। অন্য চালক সেদিন ওই বাসটি চালিয়েছিলেন। কিন্তু তাদেরকে না ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাকে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে ৭ হাজার টাকা নিয়েছে। আরও টাকা দাবি করে তিনি আমার কাছে ড্রাইভিং লাইসেন্সের কাগজপত্র চাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে এস আই শামীম হোসেন টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে জানান, মামলাটিতে অজ্ঞাত বাসচালক ও হেলপারকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আমি ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ কাগজপত্র চেয়েছিলাম। আর আমাদের কাছে তথ্য ছিল গ্রেপ্তার করা ব্যক্তি ওইদিন ওই বাসটিতেই দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সহকারী পুলিশ সুপার (শৈলকুপা সার্কেল) আরিফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার বদলীর সাথে মামলার কোন সম্পর্ক নেই। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ ঘটনায় অজ্ঞাত বাসচালক ও হেলপারকে আসামি করে মামলা হয়েছে। প্রকৃত দায়ীদের খুঁজে বের করে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। কোনক্রমেই নিরাপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার হবে না এবং দোষীরা ছাড় পাবে না বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/ এস আই