খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সোনারগাঁওয়ে টিস্যু গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট
  আগামীতে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর : আলজাজিরাকে ড. ইউনূস

নিজে প্রাণ দিয়ে বড় ক্ষতি থেকে বাঁচালেন বিমান বাহিনীর সেই পাইলট

গেজেট ডেস্ক

নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনমানুষকে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছেন চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত হওয়া বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানের দুই পাইলট। বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাইলটদের এ বীরত্বের কথা জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আইএসপিআর জানিয়েছে, আজ সকাল ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে বিমান বাহিনীর ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এর আগে যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। সেসময় বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে বিমানবন্দরের পাশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে বিমানটিকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যান দুই পাইলট। এর ফলে অনেক বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায় স্থানীয় মানুষজন।

এ দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা দুই পাইলটের মধ্যে অসীম জাওয়াদ (৩২) নামে একজন মারা গেছেন। তিনি বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই দুর্ঘটনায় আহত হন পাইলট সোহান। তিনি বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, অসীম ২০১০ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে (বাফা) যোগদান করেন। তিনি ২০১১ সালে একজন পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। ওই সময় প্রশিক্ষণে সামগ্রিকভাবে সেরা পারফরম্যান্সের জন্যে তিনি পেয়েছেন গৌরবমণ্ডিত সোর্ড অব অনার।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি কর্ণফুলী নদীতে ছিটকে পড়ে পানিতে তলিয়ে যায়। এর আগে বিমান থেকে দুই পাইলট প্যারাশুটযোগে নেমে যান। পরবর্তীতে নদী থেকে দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় একজনের।

বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই সার্জেন্ট জহুরুল হক বিমান ঘাঁটির অবস্থান। দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটি সেখান থেকে উড়াল দেয়। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরে বিমানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। একপর্যায়ে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। বিমানটি কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত হয়।

এদিকে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের জন্য ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। দুর্ঘটনায় পতিত বিমানটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, নিহত স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ ১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. আমান উল্লাহ এবং মায়ের নাম নিলুফা আক্তার খানম। আসিম জাওয়াদ ২০০৭ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে বিএসসি (অ্যারো) পাস করেন। তিনি ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার পান এবং জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন।

চাকরিকালে তিনি বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি পেশাদারি দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ মফিজ ট্রফি, বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি ও বিমানবাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেন। তিনি চাকরিকালে দেশে-বিদেশে পেশাগত বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে তা সম্পন্ন করেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!