চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় নিখোঁজের ২৫ দিন পর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শিশু আবু হুরাইরার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে তালতলা গ্রামের কবরস্থানে একটি কবরের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় আটক দুজনের মধ্যে রাজমিস্ত্রী আব্দুল মোমিনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আবু হুরাইরা চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের ভুট্টা ব্যবসায়ী ও কৃষক আব্দুল বারেকের একমাত্র ছেলে। সে চুয়াডাঙ্গা ভি জে সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
এর আগে ১৯ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পাশের বাড়ির রঞ্জু হক নামে এক প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে যায় আবু হুরাইরা। ওই শিক্ষকের ঘরে ব্যাগ রেখে সে বাইরে বের হয়। এরপর থেকে তাকে পাওয়া যায়নি। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হয়। রাতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এলাকায় মাইকিংও করা হয়।
পরে ধারণা করা হয়, বাড়ির পাশে পুকুরে পড়েছে হয়তো। সে অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা এসে পুকুরে দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি করেন। তারপরও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে সদর থানায় একটি মামলা করে শিশুর বাবা। এই মামলায় গ্রেফতার হয় শিক্ষক রঞ্জু ও তার ভাই মঞ্জু।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজের পর থেকেই অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। এই মামলায় গ্রেফতার রঞ্জু ও মঞ্জুকে জিজ্ঞাবাদের পরও তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পরে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে একই এলাকার আব্দুল মোমিনসহ দুইজনকে আটক করে পুলিশ।
এরপর আব্দুল মোমিনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রোববার রাতে কবরস্থানে অভিযান চালানো হয়। কবরস্থানের ভেতর থেকে শিশুটির অর্ধগলিত হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আটক রাজমিস্ত্রী আব্দুল মোমিন তালতলা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে ও আবু হুরাইরার প্রতিবেশী।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, নিখোঁজের মামলায় গ্রেফতার দুজনের কাছ থেকে আমরা কোনো তথ্য পাইনি। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তৎপর চালিয়ে আব্দুল মোমিনসহ দুজনকে আটক করি। পরে আব্দুল মোমিনের স্বীকারোক্তিতে কবরস্থানের মধ্যে একটি কবর থেকে শিশুটির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে।