‘অবুঝ হৃদয়’ আর ‘বদনাম’ এ ভরা জীবন তার। কিন্তু ২৯ বছর পরও তিনি চিরসবুজ তার স্টাইলিশ নায়ক সত্ত্বায়। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন অসাধারণ গিটারিস্ট এবং গায়ক। ‘হয় যদি বদনাম হোক আরো/ আমি তো এখন আর নই কারো’ কিংবা ‘সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী’। তিনি জাফর ইকবাল। ‘ফকির মজনু শাহ’।
চিত্রনায়ক, গায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা চিরসবুজ জাফর ইকবালের ২৯তম মৃত্যু বার্ষিকী শুক্রবার। ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি মারা যান তিনি। ৬০ দশকের শেষের দিকে ‘আপন-পর’ ছবির মাধ্যমে তিনি নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
মৃত্যুবার্ষিকীতে জাফর ইকবালকে সাংগঠনিকভাবে স্মরণ না করলেও ভুলেনি সাধারণ সিনেপ্রেমীরা। ঢাকাই ছবিতে জাফর ইকবাল ছিলেন সত্তর ও আশির দশকের সুপারহিট নায়ক। তাকে স্টাইল আইকন হিসেবে নিয়েছিলেন সেসময়ের তরুণরা।
জাফর ইকবাল জন্মেছিলেন ১৯৫০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর, ঢাকার গুলশানে। বাড়িতে গান-বাজনার রেওয়াজ ছিল। তার ছোট বোন শাহানাজ রহমতুল্লাহ ছিলেন একজন সুপরিচিত কণ্ঠশিল্পী। বড় ভাই আনোয়ার পারভেজও নামকরা সংগীতজ্ঞ। তিনি ছিলেন সংগীত পরিচালক। বহু চলচ্চিত্রের জন্য গান করেছেন।
ক্যারিয়ারে জাফর ইকবাল প্রায় ১৫০টির মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। যার বেশিরভাগই ছিল ব্যবসা সফল। তিনি প্রযোজক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। ‘প্রেমিক’ সিনেমাটি তার প্রযোজনায় নির্মিত হয়।
ববিতার সঙ্গে তার জুটি ছিল দর্শক নন্দিত। ববিতার বিপরীতে ৩০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এই জুটির বাস্তব জীবনে প্রেম চলেছে বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। তাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ায় হতাশ হয়েই জাফর ইকবাল অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারা যান বলে জোর গুঞ্জন উঠেছিল। অনেকেই বলেন, ‘সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী হয়ে কারো ঘরণী’ গানটি জাফর ইকবাল ববিতার জন্যই গেয়েছিলেন। যদিও প্রেমের বিষয়ে ববিতা বা জাফর ইকবাল কেউ-ই কখনো মুখ খুলেননি।
জাফর ইকবাল অভিনীত ‘ভাই বন্ধু’, ‘চোরের বউ’, ‘অবদান’, ‘সাধারণ মেয়ে’, ‘একই অঙ্গে এত রূপ’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘দিনের পর দিন’, ‘বেদ্বীন’, ‘অংশীদার’, ‘মেঘবিজলী বাদল’, ‘নয়নের আলো’, ‘সাত রাজার ধন’, ‘আশীর্বাদ’, ‘অপমান’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘গৃহলক্ষ্মী’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘প্রেমিক’, ‘নবাব’, ‘প্রতিরোধ’, ‘ফুলের মালা’, ‘সিআইডি’, ‘মর্যাদা’ ,‘সন্ধি’, ‘বন্ধু আমার’, ‘উসিলা’ ইত্যাদি চলচ্চিত্র সুপারহিট হয়।
খুলনা গেজেট/কেএম