নারীর আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ব্যাপকভাবে কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এছাড়া অবিচারের ধারা থেকে বেরিয়ে বিচারের ধারায় ফিরেছে দেশ। বেগম রোকেয়া দিবসে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এমনটি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি রক্ষনশীল সামাজিক অবকাঠামোয় নারীদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে, মুক্তির পথ দেখিয়েছেন বেগম রোকেয়া।
নারীর ক্ষমতায়ন, জাগরণ, অধিকার ও শিক্ষা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন জাতির পিতা এমনটি উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, নারীর আর্থসামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নির্যাতন প্রতিরোধে সবধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার। নারী পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাবে এমন আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সবাইকে বাড়তি সচেতনা নেয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে দেশের পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২০’ প্রদান করা হয়েছে। পদকপ্রাপ্ত নারী বা তার পরিবারের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরার কাছ থেকে সম্মাননা পদক, সনদ ও চেক গ্রহণ করেন।
‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২০’ পাওয়া পাঁচজন বিশিষ্ট নারী হলেন- নারী শিক্ষায় প্রফেসর ড. শিরীন আখতার, পেশাগত উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে কর্নেল (ডা.) নাজমা বেগম, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মঞ্জুলিকা চাকমা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারী শফি ও নারী অধিকারে অবদানের ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার।
নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শকে সামনে রেখে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হয়। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সেসময় মুসলিম সমাজে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো হতো না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও পরিবারের সবার অগোচরে তার বড় ভাইয়ের কাছে উর্দু, বাংলা, আরবি ও ফারসি পড়তে এবং লিখতে শেখেন। তার জীবনে শিক্ষালাভ ও মূল্যবোধ গঠনে তার ভাই ও বড় বোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। পরবর্তীতে বিহারের ভাগলপুরে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। স্বামীর উৎসাহে ও নিজের আগ্রহে তিনি লেখাপড়ার প্রসার ঘটান। বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মারা যান।
খুলনা গেজেট /এমএম