বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়েশা খানম আর নেই। শনিবার ভোরে ঢাকার নিজ বাসায় অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মালেকা বানু জানান, আয়েশা খানম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গতকাল রাতে নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ভোরে চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
১৯৪৭ সালের ১৮ অক্টোবর নেত্রকোনা ও দুর্গাপুরের মাঝখানে গাবড়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আয়েশা খানম৷ তার বাবার নাম গোলাম আলী খান এবং মা জামাতুন্নেসা খানম৷
হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের দাবিতে ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পর্ক আয়েশার। তবে ১৯৬৬ সাল থেকে ছাত্র আন্দোলনে পুরোপুরি সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ফলে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলনসহ স্বাধীনতা যুদ্ধের পথে এগিয়ে যেতে যেসব আন্দোলন-সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছিল সেসবগুলোতেই তিনি সামনের সারিতে ছিলেন৷
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং সংগ্রামী নেত্রী আয়েশা খানম। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি৷ এছাড়া রোকেয়া হলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ঢাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের সংগঠিত করার দায়িত্ব ছিল মূলত আয়েশা এবং তাঁর সহকর্মী ছাত্র নেতাদের উপর৷ এছাড়া ছাত্র নেতা হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বাধিকার আন্দোলনের পক্ষে জনমত গড়ে তোলা ও সচেতনতার কাজেও সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন তিনি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও নিজেকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, সমান অধিকার ভিত্তিক সমাজ গড়ার কাজে জড়িয়ে রেখেছেন নারীনেত্রী আয়েশা খানম৷ এছাড়া নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এখনও লড়াই চালিয়ে যান তিনি। শুরু থেকেই বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রথমে ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আয়েশা খানম।
খুলনা গেজেট/কেএম