নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে পোশাক কারখানায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৬টি ইউনিটের চেষ্টায় প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদফতরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার।
এর আগে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে জাহিন গার্মেন্টসে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর প্রথম ইউনিটটি পৌঁছায় ১৫ মিনিটের মধ্যেই। এরপর একে একে বাড়ানো হয় ইউনিটের সংখ্যা। শেষপর্যন্ত ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদফতরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, রাত ৯টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। হতাহতের কোনো খবর আমরা পাইনি। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও প্রাথমিকভাবে বলতে পারছি না।
শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় জাহিন নিটওয়্যার নামে ওই কারখানার মূল অংশ বন্ধ ছিল খুব অল্প সংখ্যক শ্রমিক ছিলেন। কারখানার সুইং বিভাগের শ্রমিক হাবিব জানান, এ কারখানায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কিন্তু শুক্রবার বেশিরভাগ ইউনিট বন্ধ ছিল। তবে প্রতিটি ইউনিটে কিছু শ্রমিক তৈরি পোশাক প্যাকেট করে শিপমেন্টের জন্য ৬ নম্বর ইউনিটে সরানোর কাজ করছিলেন।
কারখানার আশেপাশে বেশকিছু শ্রমিক বসবাস করেন। দূর থেকে ধোঁয়া দেখে তারা আগুন নেভাতে আসেন। প্রচুর ধোঁয়া পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ার কারণে পাশের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির ২ নম্বর ইউনিটের দোতলা শেডের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে শ্রমিকরা সেখানে ঢুকে জানালার কাঁচ ভেঙে দেন, যাতে ধোঁয়া বের হতে পারে। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে তারা নেমে এসে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভাতে শুরু করেন।
জাহিন নিটওয়্যারের নির্বাহী পরিচালক শফিউদ্দিন ভূঁইয়া জানান, আগুন লাগার পরপরই নিরাপত্তারক্ষীরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে বলেন। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসতে ৩০-৩৫ মিনিট দেরি করে। এ সময় আগুন ২, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ইউনিটে ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তাকর্মীরা পাশের পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। পুলিশ বিদ্যুৎ বিভাগকে ফোন দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি ইউনিটের ওপরের অংশ স্টিল স্ট্রাকচারের। উপরের অংশ কাঠ ও বোর্ড দিয়ে ভেতরের অংশে ডেকোরেশন করা। এখানে মূলত গেঞ্জি, পলো শার্ট, জ্যাকেট, ট্রাউজার তৈরি হয়। প্রতিটি ইউনিটের ওপরের অংশে এসব তৈরি পোশাক প্রচুর পরিমাণে মজুত ছিল। আগুনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, কারখানার পরিসর বড় হওয়ায় এবং আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বেগ পেতে হয়। তবে, কারখানা বন্ধ থাকার কারণে ভেতরে কোনো শ্রমিক আটকা পড়েননি বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। হতাহতেরও কোনো খবর নেই।
খুলনা গেজেট/ এস আই