ভুত মেরে নাপিত এখন বিখ্যাত বীর। তাকে দেখার জন্য প্রতিদিন তুষার রাজ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রজারা আসছে। আসার সময় কেউ খালি হাতে আসছে না। কিছু না কিছু নিয়ে আসছে। এখন আর কোন পিতা-মাতা সন্তান হারাচ্ছেনা, কোন বোন হারাচ্ছেনা তার ভাই। স্ত্রী হারাচ্ছেনা সামী । রাজা তাকে জাতীয় বীর হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত করে। সবাই সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। সবাই তাকে বীর সাহেব বলে ডাকে। নাপিত সকালের নাস্তা করে বসে আছেন। এমন সময় রাজার লোক পালকী নিয়ে এলো। বললো,
: রাজা সাহেব আপনাকে ডাকছেন। আপনি পালকীতে উঠুন।
নাপিত পালকীতে উঠলো। বেহারা নাপিতকে নিয়ে রাজ দরবারে এলো। রাজা উঠে এসে বললেন,
: আসুন বীর সাহেব। এখানে বসুন।
নাপিত সুন্দর একটি চেয়ারে বসলেন।
: আপনি আমাদের জাতীয় বীর। আমরা ভীষণ সমস্যায় পড়েছি। আমার বিশ্বাস আপনি পারবেন সমাধান করতে।
: সমস্যা কি বলুন?
: পাশের রাজ্য আমাদের দেশ দখল করতে যাচ্ছে। আপনি আপনার জ্ঞান, বুদ্ধি ও শক্তি কাজে লাগিয়ে রাজ্যকে বাঁচান। বলুন কত সৈন্য লাগবে।
নাপিত কখনো যুদ্ধ করেনি। তার কোন ধারণা নেই।
: এক হাজার সৈন্য দিলে চলবে।
: ঠিক আছে, ঘোড়ায় উঠুন। সব আপনার পিছনে যাবে।
দুই রাজ্যের মাঝে নদী সীমানা। নাপিন দেখিলেন শত্রুরা নদীর ওপাশে তাবু গরেছে। নাপিত নদীর এপাশে তাবু গরতে আদেশ দিলেন। নদীর ধারে পায়খানা তৈরী করা হল। নাপিত তাদের তাবুর চতুর্দিকে সৈন্য হিসেব করলো। মনে হলো ১০ হাজারের মত সৈন্য হবে। তার মাত্র ১ হাজার। হেরে যাবার সম্ভাবনা বেশি। কি করবে ভাবতে শুরু করলেন। হঠাৎ বুদ্ধি এসে গেল। আরো তাবু গারতে বললেন। খাবারের মধ্যে সাবান দিলেন। সাবান যুক্ত খাবার খেয়ে সবার অবস্থা করুণ হয়ে গেল। এক একজন ১০/১২ বার যেতে থাকল। অন্যদিকে শত্রুরা মানুষ হিসাব করার জন্য সেনাবাহিনী নদীর ধারে রেখেছে। তারা দেখলো এদের সৈন্য শেষ হচ্ছে না। মনে মনে ধারণা করলো ২০/৩০ হাজার সৈন্য হবে। এদের সাথে কখনো পারা যাবে না। রাজাকে ঘটনা খুলে বললেন। তিনি চলে আসার আদেশ দিলেন। নাপিত দেখলো তারা যুদ্ধ না করে চলে যাচ্ছে, তাহলেতো সাবানে কাজ হয়েছে। শত্রুমুক্ত করে নাপিত রাজ্যে ফিরে এলো। রাজা ভীষণ খুশি হল। সারা রাজ্য জুড়ে জয়ের আনন্দ উৎসবের ব্যবস্থা করলেন। রাজা নাপিতকে রাজ্যের প্রধান সেনাপতি হিসেবে ঘোষণা করলেন। আরো সুন্দর বাড়ি উপহার দিলেন।
খুলনা গেজেট/কেএম