খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুই জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২২
  কুষ্টিয়ার বটতৈলে বাসচাপায় মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত

না’ত-ই রাসূল ( নবী করিম (সা:) এর প্রতি প্রশংসা )

মূল: কবি নুরউদ্দীন জামি (রহঃ), অনুবাদ: গাজী আবদুল্লাহেল বাকী

(কবি নুরউদ্দীন জামি (রহঃ) ফার্সি সাহিত্যের বিখ্যাত পন্ডিত, নকশবন্দী সুফী এবং মরমি কবি। একাধিক ঐতিহাসিক তথ্যে জানা যায়, তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে পবিত্র হজ্জ্ব পালনের পর তথ্য মোতাবেক নিন্মোক্ত না’ত শরিফটি প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর রওজা মোবারকের পাশে জিয়ারতের সময় পাঠ করবেন। কিন্তু হযরত নবী করিম (সা:) এর তরফ হতে তাকে মদিনা শরিফে যাওয়া এবং সেখানে না’ত শরিফটি পাঠ করা হতে বিশেষ পন্থায় বিরত রাখা হয়, তার সাথে মোলাকাতের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য।)

অত্মারা সব ঘোর বিলাপে প্রভুর সকাশ ছিন্ন হতেই,
দয়ার তরে তাই পাঠালেন মহান রাসুল খোদা নিজেই।

নও কি তুমি সেইতো সে জন কেমন করে থাকবে দূরে?
করবে দয়া সবার তরে জীবন যাদের দূঃখ জুড়ে।

পান করেছো পূর্ণ মাপে শিশির ঝরা টিউলিপের নীর,
নার্সিসাস-তো ওঠো জেগে ছাড়বে নাকো নিদ্রা গভীর।

আশির্বাদের পর্দা হতে দেখাও তোমার শির মুবারক,
দেখাও ললাট যার বিকাশে জীবন উষা হোক যে সুখদ।

তপন-উজল আনো প্রভাত যাক ঘুচে সব নিশা দুখের,
আনন তোমার দিক সাজিয়ে গৌরব উজল দিন আমাদের।

মাথায় তোমার লম্বা কালো বাবরি কেশের বাহার ঝোলে,
মিলতে পায়ের মঞ্জু পাতা যেন তারই ছায়া দোলে।

তায়েফ হইতে হইতো আনা কোমল চামড়ার চটি পায়ের,
হয় যে মানান তারই ফিতা হৃদয়-তন্তু দিয়ে মোদের।

প্রাজ্ঞমহল সামনে তোমার যেমন পতিত সুজনি-ফরাস,
চলার পথে চুমে কদম পায় যেনো ঢের চিত্তবিলাস।

পবিত্র সেই দরবার হতে রবো যখন অনেক দুরে,
সাধ মিটাইও অধর দুটির পা বুলিয়ে তাদের পরে।


দূঃখ হতে মুক্তি পাবে পিতৃকুলকে তোলো সিধে,
তোমার প্রতি সমর্পিত দাও যে আরাম তাদের হৃদে।

যদিও ওঠে ফুঁসে তুঙ্গে পাপ-তরঙ্গ মাথার পরে,
তৃষ্ণাদীর্ণ অধরসহ পথে তোমার থাকি পড়ে।

করুণাধারার জলদ তুমি দয়ার চোখে সেই অধরে,
তাকাও ফিরে পুড়ছে যে সব তৃষ্ণা জ্বালায়–দাহ ঝরে।

তোমার পথের ধুল নয়নে ঝাপসা হয়ে অনুগ যারাই
ভর তাকতে দাঁড়ায় উঠে আশির্বাদে পুষ্ট তারাই।

ইমানদারি করতে ঝালাই আমরা খুঁজি প্রার্থনালয়,
দীপ্তি তোমার ঘিরে ওড়ে আত্মা যেনো মথ সমুদয়।

মুক্ত থাকে দিনের প্রতি হৃদয় সকল রূপ-বাতায়ন,
বাগে তোমার ক্রীড়া শেষে হই যে আমরা খোশ-উচাটন।

কেঁদে আমরা হই যে সারা দরবারে পাক দ্বারে তোমার,
ঝরতে থাকে অশ্রুধারা তাইতো নয়ন ঘুমায় না আর।

আমরা ঝাড়– দেই অলিন্দে ধুলি-ময়লা থাকে পড়ে,
হাত দিয়ে সব সাফ করে দেই কণ্ঠকী ঝোপ গুল্ম গড়ে।

শুদ্ধ করতে দৃষ্টি গভীর লাগাই চোখে তারই দাওয়া,
আস্তরণ যার হৃদের পরে দেই ছড়িয়ে যেমনি পাওয়া।

তোমার মজিদ মিম্বার পাশে আমরা সবে হই একসাথে,
সোনার রঙের চিবুকনিচয় দেই যে পেতে তার তলেতে।

সালাত আদায় করার জন্য ঢুকে পড়ি দিয়ে তোরণ,
রক্ত-কান্নায় দিই ভাসিয়ে পড়েছিলো যেথায় চরণ।

প্রতি খাম্বার মূলে আমরা দাঁড়াই সোজা হয়ে সেথায়,
এক মনে হই রত সবাই শান্তি সুখের দিন যাচনায়।

মধুর ইচ্ছায় পুত আত্মা তোমার জন্য বিচলিত,
পবিত্র সে নূর আমাদের হই যে তাতে আন্দোলিত।

ঠাঁই পেয়েছে আত্মা যেথায় পবিত্র সেই শুদ্ধ ভূমি,
হয়নি মলিন ধুলায় শরীর তাইতো ধন্য খোদা তুমি।

হই অসহায় আমরা সবাই দুষ্ট মতলব খুঁজে ফিরি,
হও যে সহায় তাদের তুমি মাফ করে দাও দূর্বলেরি।

স্ব-স্নেহের হস্ত দিয়ে করো পুষ্ট ইচ্ছা মোদের,
না হয় বৃথা শ্রম শক্তি যতো আছে দেহ মনের।

বিপথ হতে চালায় ভাগ্য পরিচালক আল্লাহ যেথা,
হেথায় হোথায় ঘোরার পরে আলোর জন্য যাচি সেথা।

তার করুণা মহৎ অতি রাখেন জীবন নিরাপদে
তার ওপরে আস্থা যেনো থাকে দৃঢ় পদে পদে।

সেই সে দিন আসবে যখন জাগবে মৃত এই ভবেতে,
মান আমাদের রাখবেন অটুট অগ্নিশিখার জ্বলন হতে।

আরও অধিক দিবেন রাসুল যদিও আমরা পথহারা,
জানাই আর্জি মুক্ত তুমি জোর শাফায়াত করতে ত্বরা।

তোমার নিপুণ সুপারিশে পাইবো মুক্তি নতো শিরে,
বলটি যেমন পোলো খেলায় পার হয়ে যায় শূন্য চিরে।

যেমনি তোমার আনুকূল্য পেলো জামি হলো সফল,
বক্রদৃষ্টে কেউবা দেখে এই কাসিদা গৌরব উজল।

তামাম শোধ




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!