নরসিংদীর রায়পুরায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে টিকা দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে ঐ গৃহবধূ মারা গেছে। গৃহবধূর নাম পারভীন বেগম। গত শনিবার রাত ১০টায় উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গৃহবধূর দেবর আলী হোসেন ও ননদ তাসলিমা বেগমের বিরুদ্ধে থানায় আগেই অভিযোগ করেন পারভীন বেগম।
জানা যায়. ১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে মরজাল ইউনিয়নের পাহাড় মরজাল এলাকার জাকির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১০ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার স্বামী প্রবাসে থাকায় প্রায়ই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে ও তার সন্তানের ওপর কারণে-অকারণে নির্যাতন করতো। বছরখানেক পূর্বে দেবর আলী হোসেন তার সন্তানের পায়ে দা দিয়ে কোপ দেয়।
নাতনির পায়ে কোপ দেয়ার ঘটনায় পারভীনের বাবা দানা মিয়া থানায় একটি মামলাও করেছিল। এরপর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওই মামলা তুলে নিতে পারভীনের ওপর নির্যাতন ও চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। ফলে সে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি সোবানপুরে গিয়ে থাকত।
গত শনিবার টিকা দেয়ার নাম করে পারভীনকে বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেয়া হয়। পরে বিকালে আলী হোসেন, ননদ তাসলিমা বেগম, তার ছেলে শাহরিয়ার ও জা রহিমা বেগমের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি থেকে টিকা দেয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। সিএনজিতে উঠলে কিছুক্ষণ পর তার চোখমুখ বেঁধে ফেলে ননদ ও দেবর। এক পর্যায়ে তার দেবর তরল জাতীয় কিছু শরীরে ঢেলে দিয়ে সিএনজি থেকে টেনে নিচে নামিয়ে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ পারভীনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত সার্জন ডা. এ.কে.এম. রেজাউল ইসলাম খান জানান, পারভীন বেগমের শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে যায়। এ অবস্থায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ সরকার বলেন, উক্ত ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনায় সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আলী হোসেন ও শাহরিয়ার নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই