নগরীর হরিনটানা আশিবিঘা নামক এলাকায় ভূমিদস্যু, ভূমির দালাল ও ছিচকে তোলাবাজদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিরীহদের বেকায়দায় ফেলে নানাভাবে হয়রানি করছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় এবং প্রশাসনের নজরদারি কম থাকায় একের পর এক নানা অপকর্ম করছে এ চক্রটি। সরেজমিনে যেয়ে এবং থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া অভিযোগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অবসর প্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্য সার্জেন্ট এস এম জামসেদ লবনচরা থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অবসরে এসে তিনি জমি কিনে হরিনটানায় ২০১৬ সাল থেকে বসবাস শুরু করেছেন। বর্তমানে নগরীর ক্ষেত্রখালী খালপাড়ে জবা ট্রেডার্স নামে একটি রড ও সিমেন্টের দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন। আশিবিঘায় বসবাসের শুরু থেকেই ওই এলাকার চিহ্নিত জমির দালাল আনোয়ার হোসেন আনুসহ ৩/৪ জন অসাধু তোলাবাজ নানাভাবে তাকে হয়রানি শুরু করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
গত ১৯ মার্চ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে প্রকাশ্যে ওই আনোয়ার হোসেন আনু, শফিকুর রহমান, গোলাম রসুলসহ ৪/৫ জনে তার গতিরোধ করে টাকা দাবি করে বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। টাকা চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাকে মারপিট করা হয় বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে ওই দিনই লবনচরা থানায় অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু তাদের অপকর্ম বন্ধ হয়নি।
এ চক্রটি আশিবিঘায় বসবাসকারী আবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় বাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে গত ২২ মার্চ লবনচরা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগি আবুল হোসেন। থানায় অভিযোগ করার অপরাধে আবুল হোসেনকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় সিনিয়র সাংবাদিক সাহেব আলীর সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে নেয়ার মত অভিযোগও রয়েছে এ চক্রের বিরুদ্ধে। এতসব অভিযোগের পরেও এ চক্রটিকে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা আটক না করায় এলাকায় ক্ষোভ দানা বাধঁছে।
এ ব্যাপারে অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট জামসেদ বলেন, পুলিশকে সকল বিষয় লিখিতভাবে দু’বার জানিয়েছি। কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নিরূপায় হয়ে আরও কয়েকটি সংস্থার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি বলে তিনি জানান।
আবুল হোসেন বলেন, পুলিশকে অভিযোগ দেয়ায় দোকানে এসে হুমকি দিয়েছে। তারপরেও কোন কাজ হয়নি।
সিনিয়র সাংবাদিক সাহেব আলী বলেন, ভদ্রলোকদের বসবাস করা কঠিন হয়েছে। এরা ছিচকে তোলাবাজ। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে এসব অপকর্ম দ্রুত বন্ধ করা সম্ভব।
লবনচরা থানার অফিসার ইনচার্জ সমির কুমার সরকার বলেন, বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ওই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভাল না থাকায় ছোট খাটো সমস্যা হচ্ছে। তবে আশা করি দ্রুত সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই