ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মারুফা খাতুন (১৪) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে গভীর রাতে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের কদমরসুলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারুফা খাতুন উপজেলার কদমরসুলপুর গ্রামের দিনমজুর মজিবর রহমানের মেয়ে এবং রায়ের গ্রাম আইয়ুবীয়া দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে মারুফা এশার নামাজ পড়ে তার ছোট বোন রাহিমার সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে। শেষরাতে মারুফাকে বিছানায় দেখতে না পেয়ে রাহিমা তার বাবা মজিবর রহমান ও মা বেদেনা খাতুনকে জানায়। পরে তারা বাড়ির অন্যদের নিয়ে মারুফাকে খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে মজিবর রহমান, তার দুইভাই দুলাল মিয়া ও শহিদুল ইসলাম বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে চৌড়াভিটার জঙ্গলে মারুফার পুড়িয়ে ফেলা লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ লাশ দেখতে চৌড়াভিটায় ভিড় জমায়। পরে গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে আসেন।
নিহতের দাদা হযরত আলী বলেন, ‘আমার নাতনী খুবই ধার্মিক প্রকৃতির ও সরল স্বভাবের ছিল। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো। সব সময়ই বাড়িতেই থাকতো। কারও সঙ্গে মিশতো না।
মারুফার মা বেদেনা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে করোনার পর আর মাদ্রাসায় যায় নাই। রাতে সে এশার নামাজ পড়ে তার ছোট বোন রাহিমা আক্তারের সঙ্গে ঘুমাতে যায়। রাহিমা ফজরের নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠে মারুফাকে দেখতে না পেয়ে আমাদের জানায়। পরে ঘরের সবাই খুঁজতে খুঁজতে ওই জঙ্গলে গিয়ে মারুফার পুড়ে যাওয়া লাশ খুঁজে পায়।’
নিহতের বাবা দিনমজুর মজিবর রহমান বলেন, ‘আমার তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ের মধ্যে মারুফা চতুর্থ। আমার কারও সঙ্গে শত্রুতা নাই। মারুফাকে কে বা কারা পুড়িয়ে হত্যা করল তা বুঝতেছি না। আমার মেয়ে তো মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতো না। তাহলে সে কিভাবে এবং কার সঙ্গে ওইখানে গেলো?’
এলাকাবাসীর ধারণা, হয়তো কেউ কৌশলে মারুফাকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে ধর্ষণ শেষে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।
গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই