দেশের পাঠ্যবই থেকে ধর্মীয় শিক্ষা ‘তুলে দেয়া হচ্ছে’ বলে যে খবর ছড়িয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের একটা অংশ বিদেশে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগও করেন তিনি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শনিবার বেলা ১১টায় ২০২১-২২ অর্থবছরে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পুনর্বাসন সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
দীপু মনি বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে পাঠ্যবই থেকে কোনো কিছু সরানো হয়নি এবং যুক্ত করাও হয়নি, যা বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
সম্প্রতি বাজেট আলোচনায় পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন সম্পর্কিত কিছু তথ্য তুলে ধরেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য (এমপি) ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফখরুল ইমাম।
ময়মনসিংহ-৮ আসনের এই সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যবইয়ে ‘একটি ধর্মকে (ইসলাম) বাদ দিয়ে আরেকটি ধর্মকে (সনাতন) প্রাধিকার দিয়ে সংস্কৃতি বদলের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এর উদাহরণ দিতে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ে বেশ কয়েকটি পরিবর্তনের উল্লেখ করেন এমপি ফখরুল। পাঠ্যবইয়ে ‘সংস্কৃতি বদলের চেষ্টা’ বন্ধের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরে তিনি নিজেই সেই বক্তব্য প্রত্যাহারের আবেদন করেন স্পিকারের কাছে।
এ ছাড়া নিজের ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি নিয়ে স্ট্যাটাসও দেন ফখরুল ইমাম। স্ট্যাটাসে সংসদে তিনি যে তথ্য দিয়েছেন, সেটি ২০১৬ সালের উল্লেখ করে দৈনিক ইনকিলাবের অনলাইনে সে সময় প্রকাশিত ওই তথ্যের প্রাসঙ্গিকতা এখন আর নেই বলেন। তারিখ বিভ্রাটের ওই ‘অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্তিতির’ জন্য দুঃখ প্রকাশও করেন তিনি।
কিন্তু তার সেই ভুল তথ্যের ভিডিও দিয়ে ধর্মভীরু মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা এই দেশে ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, যারা নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তারা তো ওই সংসদ সদস্যের ভুল তথ্যের ভিডিও দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে, উত্তেজিত করছে। কাজেই প্রত্যেককেই দায়িত্বশীল হতে হবে।’
২০২১-২২ অর্থবছরে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পুনর্বাসন সহায়তার খাত থেকে ১০১ জনের মাঝে ৫৬ লাখ টাকার চেক তুলেদেন দীপু মনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন আরও অনেকে।
খুলনা গেজেট/ এস আই