জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে এক কৃষকের দেড়হাজার ফলন্ত টমেটো গাছের গোড়া কেটে দিয়েছে প্রতিপক্ষ।
মঙ্গলবার ( ১৪ নভেম্বর) রাতের যে কোন সময় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের পুর্ব-দক্ষিনপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক অপুর্ব বিশ্বাস জানান, তিনি ৪ বিঘা জমির মৎস্য ঘের পাড়ে টমেটো চাষ করেন। প্রতিটি গাছে এখন টমেটো ঝুলছে। বিক্রিও শুরু হয়েছে। ফলধরা অবস্থায় গাছগুলো কেটে ফেলায় তার বিশাল ক্ষতি হয়েছে।দিশেহারা কৃষক ও তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষেতে বসে বিলাপ বকছেন আর কাঁদছেন।এই ঘটনার জন্য তিনি প্রতিবেশী সুখচানকে দায়ী করছেন।
ক্ষেত মালিক অপূর্ব বিশ্বাস আরো জানিয়েছেন, প্রতিদিনের ন্যায় আজ বুধবার সকালে স্ত্রী লিপিকা বিশ্বাসকে সাথে করে ঘেরপাড়ের টমেটো গাছে পানি দিতে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি টমেটো গাছের গোড়া কাটা। টমেটো চাষ করতে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। এই বাগানে টমেটো ইতোমধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছিল।এ ঘটনায় তার প্রায় ৪/৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
অপূর্ব বিশ্বাসের স্ত্রী লিপিকা বিশ্বাস বলেন, প্রতিবেশী সুখচানের সাথে ঘেরপাড়ের সীমানা নিয়ে ২০২১ সাল থেকে বিরোধ শুরু হয়। তখনও আমার ৪০০ টমেটো গাছ কেটে ফেলে।এবার আবার ১হাজার ৫০০ ফলধরা গাছ কেটে ফেলেছে।
তিনি আরো জানান, এই টমেটো চাষের আয় দিয়ে আমাদের জীবন জীবিকা চলে। খাওয়া দাওয়া ছেলে মেয়ের লেখাপড়া সবই এই টমেটো চাষের উপর। এখন আমরা কি ভাবে বাঁচবো । কি ভাবে বা ছেলে মেয়ের লেখাপড়া চালাবো। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
প্রতিবেশে মোহন লাল বিশ্বাস (৬৫) বলেন, যে কাজটা করা হয়েছে সেটা মানুষ খুন করার থেকেও বেশী। আমরা চাই একে খুঁজে বের করে কঠোর সাজা দেয়া হোক।
প্রতিবেশী আমোদ বিশ্বাস (৪৫) বলেন, এভাবে একজন মানুষের ক্ষতি করে লাভ কি? এঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করলে আর কেউ এমন কাজ করার সাহস পাবে না।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মাফরুজা আক্তার বলেন, কৃষক অপূর্বের পনেরশ গাছ কেটে ফেলেছে দূর্বিত্তরা। এতে উনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রনোদনা হিসেবে পরবর্তি চাষাবাদের জন্য বীজ সার সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।এই ঘটনায় কৃষক আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। তবে এটা আমাদের দায়িত্ব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/কেডি