দেশ ছাড়ার চেষ্টাকালে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমকে। রবিবার টার্কিস এয়ারলাইন্সের (টিকে-৭১৩) একটি বিমানে তিনি যুক্তরাজ্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় তার সঙ্গে ব্রিটিশ পাসপোর্ট ছিল।
সোমবার বিমানবন্দর ও সরকারের একাধিক সূত্রে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানতে পেরেছে।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১২ আগস্ট ভিসি পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাদেকা হালিম। এরপর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক এই জবি ভিসি।
জানা যায়, রবিবার দেশত্যাগের জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান সাদেকা হালিম। তার কাছে ব্রিটিশ পাসপোর্ট ছিল। বিমানবন্দরের দায়িত্বশীলরা তাকে আটকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তার পাসপোর্ট রেখে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর সাদেকা হালিম সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
এদিকে সাবেক এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে অন্যের গবেষণা চুরির অভিযোগ আছে। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগ ঘরানার হওয়ায় তার গবেষণা চুরির তদন্ত বেশিদূর এগোয়নি। ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সরকারপন্থি প্যানেল নীল দলের প্রায় সবাই বিজয়ী হলেও সহ-সভাপতি পদে হেরেছিলেন অধ্যাপক সাদেকা হালিম।
জবির সাবেক এই উপাচার্যের দেশত্যাগের চেষ্টার বিষয়ে বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, “গতকাল তিনি যুক্তরাজ্যে যাবেন বলে বিমানবন্দরে আসেন। তার টিকিট কাটা ছিল টার্কিস এয়ারলাইন্সে। এসময় তিনি একাই ছিলেন। ইমিগ্রেশনে তাকে (সাদেকা) দেখে দায়িত্বরত কর্মকর্তা বসতে বলেন। পরে কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে সেখানে ডাকা হয়। বেশকিছু সময় তাকে আটকে রেখে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। নানান বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সাদেকা হালিমকে জানানো হয়, তিনি দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না। রেখে যেতে হবে পাসপোর্ট। পরে তিনি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যান।”
জবির উপাচার্য থাকাকালে সাদেকা হালিম ক্যাম্পাস মসজিদে প্রবেশ করে পুরুষদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন, যা নিয়ে তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক সমালোচনা হয়। গত বছরের ৩০ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হন সাদেকা হালিম।
কেন দেশত্যাগ করছিলেন এবং এখন কোথায় আছেন জানতে সাবেক এই উপাচার্যের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
খুলনা গেজেট/এএজে