দেশে দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট পদ্ধতিতে ব্রেন ডেড মানুষের কিডনি অন্য মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। ব্রেন ডেড মো. মাসুম আলমের (৩৮) কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে দুজন কিডনি রোগে আক্রান্ত মানুষের শরীরে।
বিএসএমএমইউয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুব্রত মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মাসুম রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরের বড়গ্রাম এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার বাবার নাম মো. নূর মোহাম্মদ।
এই কর্মকর্তা জানান, বিএসএমএমইউতে দ্বিতীয়বারের মত ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাত ৯টায় শুরু হয়। মাসুম বিএসএমএমইউর আইসিউতে ব্রেন ডেড হন। তার অভিভাবকরা তাকে ক্যাডাভার হিসেবে অঙ্গদানের সম্মতি প্রদান করেন। মাসুমের একটি অঙ্গ গ্রহণ করেন ঢাকার ৪৯ বছরের মহাখালীর মোসাম্মৎ তাহমিনা ইয়াসীন।
মাসুম গত চারমাস ধরে বিএসএমএমইউর কেবিন ওয়ার্ড আইসিউতে ভর্তি ছিলেন। এই ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রধান সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল। ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের শুরুতে কেবিন ব্লকের ওটিতে ছিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি দাতা মাসুমের পরিবারের সদস্য ও গ্রহীতার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। দেশবাসীর কাছে অঙ্গদাতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া চান। রাত ১২টা ১০ মিনিটে অপারেশন শেষ হয়।
দাতার বাকি একটি অঙ্গ রাজধানীর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে আরেকজনের দেহে প্রতিস্থাপন করা হবে। গ্রহীতা জাকির হোসেনের বয়স ৪৪ বছর। তিনি সাত বছর ধরে ডায়ালাইসিস করে আসছিলেন।
গত বছরের ১৯ জানুয়ারি বিএসএমএমইউতেই প্রথমবারের মতো একজন মৃত মানুষের শরীর থেকে কিডনি নিয়ে তা অন্য দুজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। সে সময় সারাহ ইসলাম নামে ২০ বছরের এক তরুণীকে ১৮ জানুয়ারি ‘ব্রেন ডেড’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সেদিন রাতেই তার কিডনি প্রতিস্থাপিত হয় দুজন নারীর শরীরে। এছাড়া সারাহের চোখের কর্নিয়া দেওয়া হয় আরও দুজনকে।