স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেছেন, দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এর বিস্তার ছড়িয়ে পড়ছে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে মৃত্যু। বিদ্যমান পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঢাকার চারপাশে কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়েছে।
তিনি আজ বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত নিয়মিত করোনা বুলেটিনে একথা জানান।
ডা. রোবেদ আমিন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার কোনো জেলায় যদি ২০ শতাংশের ওপরে চলে যায় তাহলে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। সংক্রমণ কমিয়ে আনার জন্য চলমান লকডাউন ও বিধিনিষেধকে কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তিনি বলেন, সারা দেশে আপাতত লকডাউন নয়। তবে পরিস্থিতি যদি নাজুক হয় এবং প্রতিটি জেলায় যদি সংক্রমণ ২০ শতাংশের ওপরে চলে যায়, তা হলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডা. রোবেদ আমিন বলেন, আমরা আপাতত ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাত জেলার সংক্রমণ পরিস্থিতি দেখছি। যদি সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি এবং ঢাকার পরিস্থিতি নাজুক হয়, তাহলে শুরুতে ঢাকায় লকডাউনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুখপাত্র বলেন, সংক্রমণ কমিয়ে আনার জন্য চলমান লকডাউন ও বিধিনিষেধকে কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনে কঠোর হতে অনুরোধ করা হলো।
গত মঙ্গলবার থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ঢাকার পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জে লকডাউন ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ফলে এসব এলাকার কোনো গণপরিবহন ঢাকায় প্রবেশ করতে পারছে না।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৫ জন মারা গেছেন, যা গত প্রায় দুই মাসের মধ্যে প্রাণহানির হিসেবে সর্বোচ্চ।
এই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৭২৭ জন। আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যার দিক দিয়েও গত ৭০ দিনের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি। একদিন আগেও শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৪৮৪৬ জন।
সবশেষ ১৩ এপ্রিল ৬ হাজার ২৮ জন শনাক্ত হওয়ার পর এটিই শনাক্তের হিসেবে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩ হাজার ৭৮৭ জনে। আর মোট সংক্রমণের সংখ্যা ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজার ২৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরীক্ষা করা নমুনার ২০.২৭ শতাংশের মধ্যে করোনাভাইরাস উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই