করোনায় শনাক্তের রেকর্ড ভাঙছে প্রতিদিন। একমাসের ব্যবধানেই দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে প্রায় ছয়গুণ। পরিসংখ্যান বলছে, গতবারের চেয়েও এবার সংক্রমণ রেখা ঊর্ধ্বমুখী। জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অবহেলা আর উদাসীনতায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে সংক্রমণ। তবে স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম মানতে মানুষকে বাধ্য করা হলে এখনো এ পরিস্থিতির লাগাম টানা সম্ভব, মনে করেন তারা।
গত মাসের শুরুতেও নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ছিলো চার শতাংশ। চলতি মাসের প্রথমদিনই শনাক্তের হার হয়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ। একমাসের ব্যবধানেই এ হার বেড়েছে প্রায় ছয় গুণ। দেশে করোনা সংক্রমণের শুরুর পর এটিই সর্বোচ্চ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, একমাসে সংক্রমণ রেখা হয়েছে ঊর্ধমুখী। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৭৭ । তারপরের মাসেই শনাক্ত হয়েছেন ৬৫ হাজার ৭৯জন। এ হিসেবেও করোনা সংক্রমণ বেড়েছে প্রায় ছয় গুণ।
জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করেন, মাস্কের ব্যবহার ছেড়ে দেয়া ছাড়াও বিগত মাসগুলোতে বিয়েসহ প্রচুর সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সভা সেমিনার, পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়, যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে শনাক্তের হার বেড়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, যেকোন জায়গায়ই মানুষের সমাগম হলে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হয় না, এটা অনেক বড় একটি কারণ। ডিসেম্বরে আমাদের এখানে করোনা পজিটিভের হার কমতে শুরু করেছে তখন মানুষ মাস্ক ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছে। আমরা ভুলেই গেছিলাম যে আমাদের এখনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এই ভুলে যাওয়ার খেসারতই এখন দিচ্ছি আমরা।
পরিস্থিতি জটিল দিকে যাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কন্ঠেও এখন হতাশার সুর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, আমাদের এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মানা। এছাড়া অন্য আর কোন পথ নেই।
সংক্রমণ রেখার এমন অবস্থায়ও লাগাম টানা সম্ভব মনে করেন করোনা মোকাবেলায় জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ডাক্তার আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থবিধি মেনে চললেই এই সমস্যা লাগাম টানা সম্ভব। সবাই যদি মাস্ক পরে স্বাস্থবিধি মেনে চলে তাহলেতো আর রোগ ছড়ানোর সুযোগ নেই। সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোকেও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকারকে আরও উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ এ বিশেষজ্ঞের।
খুলনা গেজেট/এনএম