সারাদেশে বজ্রপাতে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে সাতক্ষীরায় দুইজন, চট্টগ্রামে চারজন, সিরাজগঞ্জে চারজন, ফেনীতে দুজন এবং মাদারীপুর, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, পটুয়াখালী, মানিকগঞ্জ ও বরিশালে একজন করে মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন। রোববার (৬ জুন) সকাল ৯টা থেকে বিকেলে ৬টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।
সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরায় পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামে ও তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের হরিণখোলা গ্রামে পৃথক এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের হরিণখোলা গ্রামের আশুতোষ মন্ডলের ছেলে মৎস্যঘের মালিক কিশোর মন্ডল (৩৭) ও সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের মোঃ বজলুর রহমানের মেয়ে মোছা: রাবেয়া খাতুন (২০)।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের মিরসরাই ও বোয়ালখালীতে বজ্রপাতে দুজন নিহত হয়েছেন। একইদিনে ফটিকছড়িতে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে এ বজ্রপাতের ঘটনাগুলো ঘটে।
নিহতরা হলেন বোয়ালখালীর জ্যৈষ্ঠপুরা পাহাড়ের গরজংগিয়া এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা কামালের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩৯), মিরসরাইয়ের সাহেরখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর পূর্ব ডোমখালী ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা স্কুলছাত্র সাজ্জাদ হোসেন (১৬), যোগেন্দ্র শীলের স্ত্রী ভানুমতি শীল (৪০) ও বানেশ্বর দাশের স্ত্রী লাকি রানি দাশ (৩৮)।
সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জে এক ঘণ্টার মধ্যে বজ্রপাতে চারজন নিহত হয়েছেন। রোববার বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ও উধুনিয়া এবং শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ও নরিনা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতেরা হলেন- শাহজাদপুরের কায়েমপুর ইউনিয়নের চর আঙ্গারু গ্রামের আমানত হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২৬), নরিনা ইউনিয়নের বাতিয়া গ্রামের আলহাজ বাবুর্চি (৫০), সলঙ্গা ইউনিয়নের আঙ্গারু বাঘমারা গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪৫) ও উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের আগদিঘল গ্রামের শাহেদ আলীর ছেলে স্কুলছাত্র ফরিদুল ইসলাম (১৫)।
মাদারীপুর
জেলার শিবচরে বাদাম তুলতে গিয়ে বজ্রপাতে আয়েশা বেগম (৫০) নামের এক নারী নিহত হন। বিকেল ৪টায় উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের বালুরটেকে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত আয়েশা একই এলাকার ছোরফান হাওলাদারের স্ত্রী।
ফেনী
জেলার সোনাগাজীতে বজ্রপাতে দুই শিশু নিহত হয়েছে। বেলা ১১টায় উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আলামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, সাজেদা আক্তার (১২) ও আল আমীন (৬)। সাজেদা ওই গ্রামের আনু ফরায়েজি বাড়ির সোলেমান মিয়ার মেয়ে ও আল আমীন একই বাড়ির বাহার উদ্দিনের ছেলে। তারা দুজনই স্থানীয় কাটাখিলা ছমদিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।
নোয়াখালী
জেলার হাতিয়ায় ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মো. আবদুল মান্নান খোকন (৩৬) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। দুপুর সাড়ে ৩টায় উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মাইসচরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত খোকন একই গ্রামের মৃত সৈয়দ আহমদ মুন্সীর ছেলে।
পটুয়াখালী
জেলার মির্জাগঞ্জে ক্ষেতে চাষ করার সময় বজ্রপাতে আবদুল জলিল নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। দুপুরে উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের তারাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জলিল তারাবুনিয়া গ্রামের মৃত সেরজন আলী হাওলাদারের ছেলে।
মুন্সিগঞ্জ
জেলার সিরাজদিখানে বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে অপূর্ব বর্মন (১৯) নামের এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। বিকেল ৪টায় উপজেলার শেখরননগর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুজন। নিহত অপূর্ব উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের জেলেপাড়া গ্রামের স্বপন বর্মনের ছেলে ও আলী আজগর অ্যান্ড আব্দুল্লাহ কলেজের এইচএসসির পরীক্ষার্থী।
মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জের ঘিওরে বজ্রপাতে মো.শাহীন হোসেন (১৮) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঘিওর উপজেলার বৈলট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহীন হোসেন ঘিওর সদর ইউনিয়নের মুক্তার হোসেনের ছেলে। তিনি শিবালয়ের মহাদেবপুর ইউনিয়ন ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব।
বরিশাল
বিকেল বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের উত্তর সাতলা গ্রামে বজ্রপাতে নান্টু বালী (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই এলাকার ইউনুস বালীর ছেলে ।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শওকত হোসেন নান্টু বালীর স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, বিকেলে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে একাধিক বজ্রপাত হয়। এ সময় নান্টু বালী নিজ ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে স্মার্ট ফোনে ভিডিও দেখছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে নান্টু বালী ও তার কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিবেশী মো. সুমন গুরুতর আহত হন।
তিনি আরও জানান, পরিবারের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে পৌঁছার আগেই নান্টু বালীর মৃত্যু হয়য়। গুরুতর আহত সুমনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই