রাজধানী ঢাকার বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মর্মাহত হয়ে সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তারা কী এমন উন্নয়ন কাজ করছে যে, আগুন নেভানোর মতো একটি বিভাগ পর্যন্ত নেই। এর আগে বনানীসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কেন বারবার এসব ঘটনা ঘটছে। তার কারণ যাদের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা উপযুক্ত নয়।’
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় ঠাকুরগাঁও পৌর কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে যে উদ্দেশ্যে স্বাধীন করা হয়েছিল। সেই বাংলাদেশ আজ পুরোপুরি এক নায়কতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক একটা দেশে পরিণত হয়েছে। অথচ আমরা লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্য। হারানো সেই গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি। তাই দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।’
ফখরুল আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এই লড়াইয়ে আমরা জয়ী হবো, ইনশাআল্লাহ। বিএনপি আবারো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে। সংবিধানকেও সমুন্নত রাখতে সক্ষম হবে।’
আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্ট নির্বাচনে সরকারি দলের আইনজীবীরা পুলিশের সহযোগিতায় সেই নির্বাচনকে পণ্ড করে দিয়েছে। শুধু একটি ঘটনা নয়, ঢাকা বারে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনজীবী সমিতিগুলোকে আওয়ামী লীগ সরকার বেআইনিভাবে দখল করার জন্য সব ধরনের রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করছে।’
মির্জা ফখরুল দুঃখ করে বলেন, ‘এই একটি আস্থার জায়গা ছিল। যেখানে এখনো মানুষের ভরসার জায়গা ছিল। সেই আস্থার জায়গাটিও এখন নির্মূল হওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।’
র্যাবের হাতে আটক নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু প্রসঙ্গে বলেন, ‘লঙ্ঘিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার। তাকে পুরোপরি বেআইনিভাবে তুলে নেওয়ার পরে র্যাব হেফাজতে মৃত্যু হয়। একইভাবে প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়। ৩৬ ঘণ্টা পরে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।’
বিএনপি মহাসচিব উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে দেশের মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা যে, সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে লেখার স্বাধীনতা সেটাও খর্ব করা হয়েছে। প্রথম আলোর মতিউর রহমানসহ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এভাবে প্রতিনিয়ত মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো এবারো তারা তামাশা শুরু করেছে। বিএনপি কোনো তামাশার নির্বাচন বিশ্বাস করে না। বিএনপি বিশ্বাস করে জনগণ যেখানে ভোট দিতে পারবে এবং মতামত প্রকাশ করতে পারবে এই ধরনের একটি নির্বাচন। আওয়ামী লীগ যদি সরকারে থাকে সেই নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে না। সেই কারণে ১০ দফার আন্দোলন লড়াই সংগ্রামে জনগণকে নিয়ে রাজপথে নেমেছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, আ্যাডভোকেট ইনতাজুল হক, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মামুন উর রশিদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পয়গাম আলী প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/কেডি