বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেশের মানুষ সরকারকে না জানিয়ে দিয়েছে। বিএনপি’র গণমিছিলে মানুষের উপস্থিতি তাই প্রমাণ করে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
শনিবার বিকালে রাজধানীতে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের গণমিছিল শেষে নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ গণ মিছিল করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সমস্ত অনৈতিক কাজগুলো করছে। দেশের জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক করে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এই মুহূর্তে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। কারাগারে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। সকলের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হচ্ছে।
আজকে জনগণ রাস্তায় নেমে যে আওয়াজ তুলছে আওয়ামী লীগের সে আওয়াজ কেড়ে নেয়ার শক্তি নেই। আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের একটি বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা আক্রমণ করে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাবে। দলের নেতাকর্মীদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বুকে সাহস ও শক্তি নিয়ে ভয়াবহ এই দানব সরকারকে পরাজিত করতে হবে। দলমত নির্বিশেষে কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেই সরকারকে পরাজিত করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এসময় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের এক মন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আওয়ামী লীগের কেউ নিরাপদে থাকতে পারবে না। আমরা বলতে চাই আওয়ামী লীগ যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে দেশের একজন মানুষও নিরাপদে থাকতে পারবে না। দেশের স্বাধীন -সার্বভৌমত্ব থাকবে না। তাই এ আপদ বিদায় করতে হবে।
তিনি বলেন, এ সরকারের লজ্জা থাকলে তারা বিদায় নিতো। পুলিশের উপর ভর করে বিএনপি নেতাকর্মীদের খুন-গুম করে তারা ক্ষমতায় আছে। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে বিদায় করবো।
ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।
এর আগে বিকাল সোয়া চারটায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আলাদা আলাদাভাবে গণমিছিল নিয়ে যোগ দেয়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু হয়ে আবুল হোটেল, মালিবাগ রেলগেট, মৌচাক, মালিবাগ মোড়, শান্তিনগর, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসে। এছাড়া একই সময়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি কমলাপুর থেকে শুরু করে পীরজঙ্গি মাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল মোড় হয়ে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসে।
গণ মিছিলে যোগ দিতে বেলা ১ টার পর থেকে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। উত্তর এবং দক্ষিণের বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গ-সংগঠনের ব্যানারে নেতাকর্মীরা এতে যোগ দেন।
খুলনা গেজেট/ টিএ