দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে একটি গোষ্ঠীর কদর বাড়ে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পায়রা সেতু উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা আসলে চায় না বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে বাঁচুক। এ কারণে স্বাধীনতার এত বছর পরও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল অবহেলিত রয়ে গেছে, পিছিয়ে আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমরা দেশের প্রতিটি অঞ্চলকে সমান গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়েছি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল তারাই চায় না দেশের মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। কিন্তু আজ বাংলাদেশের নাম শুনলে সবাই সম্মান করে। বিশ্বে বাংলাদেশের একটা মর্যাদার জায়গা তৈরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে যদি পায়রা সেতুতে আমি নিজে উপস্থিত থাকতাম, সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যেতে পারতাম বা হাঁটতে পারতাম তাহলে ভালো লাগতো। কিন্তু করোনার কারণে তা হলো না।
তিনি বলেন, তবে আমার ইচ্ছা আছে, পরিস্থিতি বুঝে একদিন পায়রা সেতুর ওপর দিয়ে আমি গাড়ি নিয়ে যাবে। কাছ থেকে দেখবো সেতুটি।
একসময় সড়কপথে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা যেতে দশটি ফেরি পার হতে হত। বিগত বছরগুলোতে সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়নের ফলে এই পথে বাকি ছিল কেবল দুটি ফেরি। এরমধ্যে পায়রা নদীতে সেতু চালু হওয়ায় এখন বাকি থাকল কেবল পদ্মা। আগামী বছর পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে কোনো ফেরি পারাপার ছাড়াই ঢাকা থেকে সড়কপথে কুয়াকাটা যাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সরকার ও কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের যৌথ অর্থায়নে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘লংজিয়ান রোডস অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি’ সেতুটি নির্মাণ করেছে।
পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালী পয়েন্টে সেতুটি নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায় ২০১২ সালে। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। কার্যাদেশে সেতু নির্মাণে ৩৩ মাস সময় বেঁধে দেওয়া হলেও দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই যান চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর ৮২ ভাগ অর্থায়ন করে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এবং এপেক ফান্ড। নির্মাণ কাজ করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন।
খুলনা গেজেট/এনএম