রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সহযাত্রী হিসেবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন। ৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উপলক্ষ্যে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান। ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে গত ৫০ বছরের অর্জন বাংলাদেশকে বিশ্বে রোল মডেল পরিচিতি এনে দিয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপের পাশাপাশি নারীদের সচেতনতা এ অর্জনকে ত্বরান্বিত করেছে। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯(৩) অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। নারীদের যথার্থ মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের ফলে নারী উন্নয়ন আজ সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, কূটনীতি, সশস্ত্রবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী, শান্তিরক্ষা মিশনসহ সর্বক্ষেত্রে নারীর সফল অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশ ক্রমান্বয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নারীরা দেশের জন্য সাফল্য নিয়ে এসেছেন। এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়ানো, ফুটবল ও ক্রিকেটসহ খেলাধুলায় ধারাবাহিক সাফল্য এবং বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরির ২২তম লরিয়েল-ইউনেস্কো ফর ওমেন ইন সায়েন্স এওয়ার্ড প্রাপ্তি নারীদের আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জনের উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি ও সফলতার স্বীকৃতিস্বরূপ গ্লোবাল সামিট অভ উইমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০১৮ সালে গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ এওয়ার্ড-এ ভূষিত করে। এছাড়া নারী শিক্ষা প্রসারে অবদানের জন্য জাতিসংঘের নারী ও শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ পিস ট্রি পুরস্কার প্রদান করে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নারী ও পুরুষের লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ বিষয়ক ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী লিঙ্গ সমতা অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে।
তিনি বলেন, একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব গড়ার কাজে পুরুষের সমান অবদান রাখার প্রত্যয় নিয়ে নারীর এগিয়ে চলা আরো বেগবান হবে মুজিববর্ষে- এটাই হোক সকলের অঙ্গীকার। তিনি ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২’ এর সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।