আধুনিক যুগে মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে পারে খুব সহজে। তারই সুফলে স্বল্পউন্নত দেশগুলো উন্নত দেশগুলোতে তাদের শ্রম বাজার খুঁজে নিচ্ছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তাদের কর্মসংস্থান খুজতে সৌদি আরব, কাতার,কুয়েত,মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে পাড়ি জমায়।
বাংলাদেশ একটি ছোট্ট দেশ। এদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাদের উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠায়। তাদের এই অর্থকে বলে রেমিট্যান্স আর যারা এই অর্থ পাঠায় তাদেরকে আমরা রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলে জানি।
প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে। দেশের মোট জিডিপিতে রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। জীবনযাত্রার মান, আবাসন,কর্মসংস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা বিভিন্ন উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখে রেমিট্যান্স।
বিশ্বব্যাপী মহামারি কালে বড় বড় অর্থনৈতিক সংস্থাগুলোর পূর্বাভাসকে ভুল প্রমানিত বেডেই চলেছে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ। কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পরপরই বিশ্ব ব্যাংক,আই এম এফের এক গবেষণায় বাংলাদেশের রেমিট্যান্স ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল কিন্তুু বাস্তবে উল্টো পরিস্থিতি দেখা গেছে। ২০১৯ সালের স্বাভাবিক সময়ে প্রবাসীরা যে রেমিট্যান্স প্রেরণ করেছিল মহামারি সময়ে সেই প্রবাহ উল্টো ৩৮ শতাংশ বেড়ে গেছে।
দুর্দিনের সঙ্গী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। আজ রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আছে বলে পদ্মা সেতু মতো বড় বড় প্রকল্প করতে অন্যের কাছে হাত পাততে হয় না। দেশ উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছে আর এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবদান অনস্বীকার্য।
বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক ও সফল শ্রম কুটনৈতিক প্রচেষ্টায় বিগত ১০ বছরে ৬৬ লক্ষ ৩৩ হাজার মতো কর্মী প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করছে। বিগত বছর থেকে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। আরও কিছু পদক্ষেপ যেমন, মানবপাচারকারী বা দালাল চক্রকে চিহ্নিত করা, বিমানবন্দরের ভোগান্তি দূর, পর্যাপ্ত ঋণ, শ্রমবাজার বৃদ্ধি,এসব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে নিরাপদে থাকবে আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা বাঁচলে অর্থনীতি বাঁচবে আর অর্থনীতি বাঁচলে দেশ বাঁচবে।
(রাজু আহমেদ, আইন ২য় বর্ষ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)
খুলনা গেজেট/ এ হোসেন/ টি আই