খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ভারতের সাথে বন্দি বিনিময় চুক্তির ভিত্তিতে সরকার শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে : চিফ প্রসিকিউটর
  জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ১৩ জনের শুনানি চলছে
  শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার তদন্ত শেষ করা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

‘দেশটাকে যেখানে নিয়ে এলাম সেই গতিটা যেন অব্যাহত থাকে’

গেজেট ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে কোনভাবেই বিভ্রান্তির পথে না গিয়ে পাঠে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘তোমাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মেলাতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে এখন থেকেই নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ৪র্থ শিল্প বিপ্লব আসবে, প্রযুক্তির এই যুগে মানুষের কর্মদক্ষতারও পরিবর্তন ঘটবে এবং তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের এখন থেকে তৈরি হতে হবে।’

শেখ হাসিনা আজ দুপুরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে রাজধানীর খামার বাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্রলীগের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, মানুষের জন্য কাজ করাই ছাত্রলীগের মুল দায়িত্ব। এটাই রাজনৈতিক নেতাদের কাজ এবং তা ছাত্রলীগকে মনে রাখতে হবে। জাতির পিতার বলে যাওয়া কথা ‘মহান অর্জনের জন্য মহান আত্মত্যাগ দরকার’ সে কথা ছাত্রলীগকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, কাজেই আমাদের ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীকে মনে রাখতে হবে তারা কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়। সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। দূর্ণীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। নিজেদের এ সবের উর্ধ্বে রেখে দেশ যেন শান্তির পথে, উন্নয়নের এগিয়ে যেতে পারে সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

ছাত্রলীগের মূল মন্ত্র শিক্ষা, শান্তি এবং প্রগতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদেরকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এগুতে হবে। কম্পিউটার শিক্ষা, প্রযুক্তি শিক্ষা, ইন্টারনেট ব্যবহার, সকলের হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দেয়া-আমরা সবই করে দিয়েছি। ২০০৮ সাল থেকে একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আজকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তির ব্যবহার পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। কাজেই মানুষকে আর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। মানুষের দৃষ্টি খুলে গেছে কেননা হাতের মুঠোয় পৃথিবী এসে গেছে।

বাংলা, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি কক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়।
অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি আল রাহিয়ান খান জয় সভাপতিত্ব করেন। এ ছাড়া, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান এমপি বক্তৃতা করেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপরই জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং ’৭৫ এর ১৫ই আগষ্টের সকল শহিদসহ মুক্তিযুদ্ধের সব শহিদদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘মাতৃভূমি পাঠাগার’ ও উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ৪র্থ শিল্প বিপ্লব আসবে, প্রযুক্তির এই যুগে মানুষের কর্মদক্ষতারও পরিবর্তন ঘটবে এবং তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের এখন থেকে তৈরি হতে হবে। যাতে এই ৪র্থ মিল্প বিপ্লবের যুগে দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তোলার যে পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি সেটা কাজে লাগাতে পারি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারি।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ’৪১ সাল নাগাদ এই বাংলাদেশ বিশ্বে একটা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।

দেশকে এগিয়ে নেয়ার তাঁর সরকারের পঞ্চবার্ষিকী এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনার উল্লেখ করে ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীকে সুশিক্ষিত হয়ে গড়ে ওঠার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের সৈনিক হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তোলার প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে।

নীতি এবং আদর্শ নিয়ে চললে সকল বাধা যে অতিক্রম করা যায় তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মানের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, বিশ^ ব্যাংকের দুর্ণীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের এই একটি ঘোষণা সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির আমূল বদলে দিয়েছে। এই অর্জনকে তিনি ধরে রাখার আহবান জানান।

সরকার প্রধান বলেন, আমাদের দল গণমানুষের দল, অধিকার হারা মানুষের কথা বলেই এই সংগঠন তৈরি। এই গর্বটা থাকতে হবে কিন্তু সেটা যেন আবার অহমিকায় পরিণত না হয় সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে, বিণয়ী হতে হবে। আর দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে।

এ প্রসঙ্গে জাতির পিতার বিখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে ইন্টারভিউতে করা বিখ্যাত উক্তি ‘আই লাভ মাই পিপল’, ‘আই লাভ দেম টু মাচ’ এর উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, সত্যিই তিনি এ দেশের মানুষকে ভীষণ ভালবাসতেন। তবে, যাঁদেরকে অতিরিক্ত ভালবেসেন তাদের কাছ থেকেই তাঁকে গুলির শিকার হতে হয়েছে, সেটাই দুর্ভাগ্যের বিষয়।

তিনি বলেন, বুলেট, বোমা-অনেক কিছুইতো মোকাবিলা করেছি। সেই চিন্তা করিনা কিন্তু দেশটাকে যেখানে নিয়ে এলাম সেই গতিটা যেন অব্যাহত থাকে। আবার যেন আমাদের পিছিয়ে যেতে না হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগসহ আমাদের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সকলকেই এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে, যাতে আবার কোন হায়েনার দল এসে এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া যাবেনা।

ছাত্রলীগকে বলি তোমরা নিজেদেরকে গড়ে তুলবা একজন আদর্শবান কর্মী হিসেবে। খেয়াল রাখবা কোন লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে যেওনা। নিজেদের শক্ত করে সততার পথে এগিয়ে যাবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করবে এবং জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করবে। আর সেভাবেই নেতৃত্ব গড়ে উঠবে, বলেন তিনি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!