বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর গোলারচক গ্রামের আহমদ উল্লাহ রাজ নামের এক শিশু হত্যার দেড় মাসেও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এ অবস্থায় সন্তান হত্যার বিচারের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন পিতা-মাতা। পুলিশ বলছে, নিখোজের ৮দিন পর পার্শ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার কচানদী থেকে উদ্ধার করা অর্ধগলিত শিশুর মরদেহটি রাজের কিনা নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় নমুনা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার জানায়, ২০২৪ সালের ২২ নভেম্বর, শুক্রবার বিকেলে অন্যান্য দিনের মত বাড়ির সামনে খেলছিল শিশু আহমদ উল্লাহ রাজ (৯)। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে নিজ বাড়ির সামনে থেকে নিখোজ হয় রাজ। বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজির পরে না পেয়ে ওই রাতেই মোল্লাহাট থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন রাজের বাবা আলাউদ্দিন মোল্লা। এর ৮দিন পর ৩০ নভেম্বর পিরোজপুর জেলার পাড়েরহাট নৌ-পুলিশ কচানদী থেকে অজ্ঞাত অর্ধগলিত এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। পরে পরিচয় না পাওয়ায় প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে, আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন সম্পন্ন করে নৌপুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে রাজের বাবা-মা ও ওই শিশুকে নিজের নিখোজ সন্তান বলে দাবি করেন।
রাজের বাবা আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, ধারণা করছি কেউ তাকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে, হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দিয়েছে। কচানদী থেকে উদ্ধার ওই শিশুর একটি হাত ভাঙ্গা ছিল। আমার রাজেরও একটি হাত ভাঙ্গা ছিল এবং প্লাস্টার করা ছিল। যা দেখে আমরা সহজেই শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।
রাজের মা রাজিয়া সুলতানা বলেন, নিখোজের দিন মাত্র ২০ মিনিট আগেও রাজকে দেখেছি। এত কম সময়ে রাজকে কে বা কারা ধরে নিয়ে গেছে তা আমরা জানি না। তবে ধারণা করছি, মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় ও জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকায় পরিকল্পিতভাবে আমার শিশু সন্তানকে ধরে নিয়ে অন্য জেলায় হত্যা করা হয়েছে। প্রায় দেড় মাস হয়ে গেল, এখনও আমার সন্তানের হত্যার কোন রহস্য পুলিশ জানাতে পারেনি। আমরা হত্যার সাথে জড়িতদের শনাক্তপূর্বক বিচার চাই।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, কচানদী থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত শিশুটিকে আলা উদ্দিন দম্পতি তাদের সন্তান বলে দাবি করেছেন। ওই শিশুর সঠিক পরিচয় উদঘাটনে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সেখানের রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করব।
খুলনা গেজেট/ টিএ