ঘরোয়া ক্রিকেটে গতির ঝড় তুলে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নাহিদ রানা দেশের জার্সিতেও একই রূপে হাজির হলেন। লঙ্কানদের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমেই ঘণ্টায় গড়ে ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করেছেন। কোনো কোনো বল ছুড়ছেন ঘণ্টায় ১৪৬.৩ কিলোমিটার গতিতেও।
যদিও গতির সঙ্গে দেদারসে রানও বিলিয়েছেন। টাইগার বোলারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খরুচেও তিনি। বিপরীতে অভিষেক উইকেটের অপেক্ষাটাও কেবল বাড়ছিল। অবশেষে উইকেটের গেরো খুললেন। সেই সঙ্গে দুই সেঞ্চুরিয়ানকে ফিরিয়ে স্বাগতিক শিবিরে স্বস্তি বয়ে আনলেন।
সিলেটে বৃষ্টিস্নাত সবুজ উইকেটে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে ৫৭ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েন কামিন্দু মেন্ডিস। দ্বিশতরানের জুটিতে দুজনই পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। তবে এরপর আর বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তরুণতুর্কি নাহিদ রানা।
ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ষষ্ঠ উইকেটে দ্বিশতরানের জুটি গড়েন কামিন্দু মেন্ডিস ও ডি সিলভা। দুজনই পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা।
ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকানো কামিন্দু মেন্ডিসকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেটটা তুলে নিলেন অভিষিক্ত এই টাইগার পেসার। নাহিদের বাউন্সারে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে তুলে দিয়েছিলেন কামিন্দু। ১১ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ইনিংসে ১২৭ বলে ১০২ রান করেছেন লঙ্কান এই ব্যাটার। তার বিদায়ে ভাঙে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে গড়া ২০২ রানের জুটি।
অবশ্য রানের খাতা খোলার আগেই ফিরতে পারতেন কামিন্দু। ইনিংসের ১৭ তম ওভারে শরিফুল ইসলামের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটের কানায় লেগে চলে গিয়েছিল স্লিপে। বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হন মাহমুদুল হাসান জয়। নিশ্চিত জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি করেই তবে ফিরলেন শেষমেশ।
কামিন্দুর বিদায়ের পর একই ওভারে নাহিদ রানার বল সীমানা ছাড়া করে ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি ছুয়ে ফেলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভাও। অবশ্য প্রতিশোধ তুলতেও সময় নিলেন না তরুণ পেসার। নিজের ফিরতি ওভারে আক্রমণে এসে লঙ্কান অধিনায়ককেই লক্ষ্যবস্তু বানালেন। ১৪২ কিলো গতির বাউন্সারে পুল করার চেষ্টায় ব্যর্থ হলেন ডি সিলভা। ডিপ স্কয়ার লেগে কোনো ভুল করলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১৩১ বলে ১০২ রান করেন লঙ্কান কাপ্তান।
প্রথম দুই সেশনে উইকেটের অপেক্ষায় থাকা নাহিদ রানা শেষ বেলায় এসে পরপর তিন ওভারে তুলে নিলেন তিন উইকেট। দুই সেঞ্চুরিয়ানের পর লেজের দিকের ব্যাটার প্রবাথ জয়াসুরিয়াকেও ফেরালেন।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম সেশনে বলতে গেলে দুমড়েমুচড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ২২ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ৯২ রান। টাইগার পেসার খালেদ আহমেদ একাই নেন তিন উইকেট। তবে মধ্যাহ্ন বিরতির পর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হন লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজনের ব্যাটে ভর করে ম্যাচে ফেরে সফরকারীরা।