আন্তর্জাতিক বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ডিলার পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম ১৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা এবং কৃষক পর্যায়ে ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ (১ আগস্ট) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম ভূইয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়ার সারের বর্তমান দাম ৮১ টাকা। ফলে, ৬ টাকা দাম বাড়ানোর পরও সরকারকে প্রতি কেজিতে ৫৯ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারে ভর্তুকি ছিল মাত্র ১৫ টাকা।
২০০৯ সাল থেকে সারের দাম চার দফা কমিয়ে অত্যন্ত কম দামে পর্যাপ্ত সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। ডিএপি সারে ১৮ শতাংশ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সেজন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার প্রতি কেজি ডিএপি সারের দাম ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে গত কয়েক বছরে ডিএপি সারের ব্যবহার দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০১৯ সালে ডিএপি ব্যবহার হতো ৮ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ১৬ লাখ টন।
ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়ার ফলে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমার কথা। কিন্তু, বাস্তবে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমেনি; বরং বেড়েছে। ২০১৯ সালে ইউরিয়ার ব্যবহার হতো ২৫ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন।
অন্যদিকে, গত এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় ৩-৪ গুণ বেড়েছে। ফলে, দেশে সারে ভর্তুকিও বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভর্তুকি ছিল ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত আছে। আমন মৌসুমে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা ৬ লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে বর্তমানে মজুত আছে ৭ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন। আমন মৌসুমে টিএসপির চাহিদা ১ লাখ ১৯ হাজার টন, মজুত ৩ লাখ ৯ হাজার টন। ডিএপির চাহিদা ২ লাখ ২৫ হাজার টন, মজুত ৬ লাখ ৩৪ হাজার টন। এমওপির চাহিদা ১ লাখ ৩৭ হাজার টন, মজুত রয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টন।