খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪
বন্ধ থাকবে ক্লাস ও পরীক্ষা

দাবি আদায়ে আজ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে খুবি ও কুয়েটের শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তিকরণ ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে ১ সোমবার (জুলাই) থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( কুয়েট) শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আহ্বানে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( কুয়েট) শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এ কর্মবিরতি শুরু হয়। কর্মবিরতির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের ক্লাস বন্ধ থাকবে। কোন ধরনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে তারা বিরত থাকবেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজ ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকী জানান, সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে সকল ডিসিপ্লিনের ক্লাস, অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাস, প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস, মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষাসহ সকল ধরনের পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ডিসিপ্লিন অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার, ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষা, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ও হলের প্রভোস্টগণের সংশ্লিষ্ট অফিসের কার্যক্রম, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আব্দুল হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আলমগীর হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ফেডারেশন ঘোষিত কর্মসূচির সাথে একাত্মতা পোষণ করে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছেঃ

১. খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ম দিবসে অথবা ছুটির দিনে অনুষ্ঠিত সকল ধরনের ক্লাস (অনলাইন ও অফলাইন) বন্ধ থাকবে।
২. অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। শিক্ষকমন্ডলী পরীক্ষা ও ভর্তি সংক্রান্ত কোন দায়িত্ব পালন করবেন না।
৩. যে সকল সম্মানিত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে আছেন তারা দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন।
৪.সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও কনফারেন্সের কর্মসূচি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।
৫. শিক্ষকগণ সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কমিটির কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।
৬.বৈষম্যমূলক ও মর্যাদাহানিকর প্রত্যয় স্কিম থেকে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন, সুপার গ্রেড এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মসূচি পালিত হবে।

কর্মসূচি চলাকালীন প্রতিদিন বেলা ১২ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আত্মসম্মান ও মর্যাদা রক্ষার্থে ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্তৃক ঘোষিত এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে পালনের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।

এছাড়া দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ২৫ থেকে ২৭ জুন অর্ধ দিবস কর্মবিরতি এবং রবিবার (৩০ জুন) সকাল সকাল ৮ টা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করে। কর্মবিরতি পালনকালে তারা ক্লাস নেওয়া থেকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন। কর্মবিরতি পালনের মধ্যে বেলা ১২ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এসময় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ তাদের দাবির স্বপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে বক্তৃতা করেন।

অপরদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( কুয়েট) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহ্বানে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করা হয়। কর্মবিরতি চলাকালে ১-৪ জুলাই প্রতিদিন অর্ধদিবস কর্মবিরতির কর্মসূচি তুলে ধরেন।

কর্মচারী সমিতিঃ দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি আজ ১ জুলাই থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত সকাল( ৯ টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত) তিন দিন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মবিরতি পালনের শেষ দিন ৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেলা ১২ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে।

এদিকে কুয়েটের কর্মচারী সমিতির সভাপতি শেখ এরশাদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসিব সরদার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের এই আইনের আওতামুক্ত রাখা এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রণীতব্য প্রহসনের অভিন্ন নীতিমালা প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশন (বাআবিকফ) এর সাথে একাত্মতা পোষণ করে কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

তবে কর্মসূচিতে কর্মচারী সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহ কর্মসূচির আওতামুক্ত রেখেছে।

একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতিও আজ থেকে কর্ম বিরতিসহ অবস্থান কর্মসূচি পালনের কর্মসূচি দিয়েছে।

খুলনা গেজেট/এনএম/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!