স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা না রাখার সিদ্ধান্তের খবরে খুশি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা। শুধু খুশি নয়, গাঝাড়া দিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন এতদিনে ঝিমিয়ে থাকা দলের পোড়খাওয়া ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। তাদের ভাষায়, এই সিদ্ধান্তে প্রকৃত জনপ্রিয় নেতাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সরব হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও এ উপজেলার ভোটের মাঠ। এখানে তিনটি পদের সাম্ভব্য প্রার্থীরা, নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের খোঁজ নিতে শুরু করেছেন। করছেন কুশল বিনিমিয়। পাড়ার ও হাট-বাজারের চায়ের দোকান গুলোতেও উপজেলা পরিষদের সাম্ভব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ।
এখানে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে সাম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম আলোচনায় আসছে তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অশোক কুমার বড়াল, তাঁর ছেলে এ্যাড. অমিতাভ বড়াল বাপী, ভাতিজি প্রায়ত এ্যাড. কালিদাস বড়ালের বড় মেয়ে অদিতি বড়াল, চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীযূষ কান্তি রায়, আনসার ও ভিডিপি’র অবসরপ্রাপ্ত জেলা কমান্ডেন্ট এফ এম বদরুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবু জাফর মোঃ আলমগীর সিদ্দিকী, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ রাশেদ পুকুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সুলতানা মল্লিক এবং বড়বাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব ওয়াহিদুজ্জামান পান্না।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মাহাতাবুজ্জামান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সাহেব আলী ফরাজী, হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী আজমীর আলী ও চরবানিয়ারী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মিলন কান্তি বাড়ৈ।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম আলোচনা হচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবেরা কামাল স্বপ্না, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিবানী বিশ্বাস, চারুবালা হীরা (চারুলতা), অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা লাইজু আক্তার ও বড়বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হাছিনা বেগম। এছাড়াও অনেকেই তিনটি পদে প্রার্থী হতে পারেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের ব্যাপারে সুরশাইল গ্রামের সাধারণ ভোটার মোঃ হাসমত আলী গাজী, কুরমনি গ্রামের বৃদ্ধ বলরাম বিশ্বাস, বোয়ালিয়া গ্রামের সুদেব মন্ডল, গরীবপুরের বিশ্বজিৎ মন্ডল ও চিতলমারী বাজারের আবুল কালম প্রায় অভিন্নসুরে বলেন, ‘এসব নির্বাচন জনগনের মনের চাওয়া-পাওয়া। এখানে মার্কা না থাকাই ভাল। মার্কা ছাড়া মানুষ প্রকৃত জনদরদীকে নির্বাচিত করবে। কিন্তু দলীয় মার্কা থাকলে সেটি তো হবে না।’
বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চিতলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল বলেন, ‘নেতৃবৃন্দ বুঝে শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি দলের সিদ্ধান্তকে সাদুবাদ জানাই।’
বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য হেপী বড়াল বলেন, ‘জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী থাকতে পারে। দলীয় প্রতীক দিলে স্থানীয়ভাবে বিভেদ সৃষ্টি হয়। উম্মুক্ত করে দিলে দলের যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হবেন।’
খুলনা গেজেট/কেডি