১.
চলন্ত ট্রেনের গতি সদা থেমে যায় না – । কখনো,
থামে না কালের প্রবাহ, ঝর্ণার স্রোতধারা, –
মহা দুর্যোগ-অন্ধকারে; সাইরেন বাতির দিকদর্শন –
ছাড়া; সাগর তীরে, নিরাপদে জাহাজ ভীড় করেনা।
চৈত্রে, রৌদ্রের খর-উত্তাপ ছাড়া, ফসলী মাঠের
মাটির ‘ফাটল-চৌচির’। কভু দেখা যায় না
বসন্ত ঋতুতে বাতাসের প্রবল গতি ছাড়া শিমুল
তুলো-আকাশে উড়ে না!!
শীতের কুয়াশা ছাড়া; মাটির নরম ঘাসে শিশির
কণা জমে না! আদ্রতায় এখন আর হাঁটা হয় না।
গোধূলি সন্ধ্যায় আঁধো অন্ধকার ছাড়া; ‘বাঁশবনের
জোনাকজ্বলা আলোর উজ্জ্বল শিখা দেখা যায় না!!’
শীতের হিমেল হাওয়ায়, নতুন আমেজ ছাড়া,-
টাঙ্গোয়ার হাওড়, জাহাঙ্গীরনগর লেক, আর
বৃক্ষছায়ায়-‘প্রবাসী পাখিরা, ভীড় করে না!’
বসন্তকাল ছাড়া বনের কোকিল সুমধুর স্বরে
কুহু কুহু ডাকে, গান গায় না।
২.
মরুর ধূলি ঝড়ে, ঘন অন্ধকারে কখনো সহজে
ঘরের বাহির হওয়া যায় না।
কায়িক শ্রম ছাড়া, সুরমা নদীর পাথর –
– নুড়ি, কঙ্কর নৌকায় তোলা যায় না।
ক্ষেতের সুষ্ঠূ আবাদ ছাড়া শস্য ফসলে পাটধানে
কৃষানের গোলা ভরে না।
মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দিগন্তে বর্ষাবাদল ছাড়া; রংধনুর রং
উজ্জ্বল আভায়-লাল সবুজে হৃদয় উঁকি দেয় না!
ভাষাবিদ, গবেষক ছাড়া পুরোনো পুঁথির পাণ্ডুলিপি পাঠোদ্ধার
করা সহজ হয় না।
আধুনিক ছন্দ-শব্দের বিবর্তনে, সংস্কৃতির –
বলয়ে, কভু জোয়ার ভাটার মতো জীবনের গতিবেগ
তলিয়ে যায় না। সবকিছু বাসনা পূরণ হয় না।
নিস্তরঙ্গ সাগরে, কখনো সাম্পান ডুবে না!!
কাঁটার দেয়াল ঘেঁষা সংলাপে, জীবনের আনন্দ
সুখ-খুঁজে পাওয়া যায় না।
দৃঢ় তাকওয়ায় খাঁটি মুমিনের ঈমান তো
ডুবে না।
রজনী পোহায়ে, প্রভাত ভিন্ন পুষ্পকলির নির্মল
বায়ুর নিঃশ্বাস পাওয়া যায় না।