‘মাটির মানুষ মাটিতে মিশে যাবে। কেন আল্লাহ দুনিয়াতে মানুষ পাঠায় মানুষের মাধ্যমে আর কেন নিষ্ঠুরভাবে কেড়ে নেন’। সন্তান হারিয়ে এমন বিলাপ করছিলেন সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত পলাশের মা। সন্তানের মুখে একবার মা ডাক শুনার জন্য যেন সোমবার সারাদিন ব্যকুল ছিলেন তিনি। তবে তিনি সন্তান হারানোর বিচার মানুষের কাছে চাননি শিউলী বেগম চেয়েছেন স্বয়ং সর্ব সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছে।
রোববার রাতে নগরীর শান্তিধাম জাতিসংঘ শিশুপার্কে আয়োজিত ঈদ মেলায় সন্ত্রাসীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হয় পলাশ। ময়নতদন্ত শেষে বিকেলে তার মরদেহ বাড়িতে পৌছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। সন্তান শোকে পাগলপ্রায় মাকে সান্তনা দিতে থাকে স্বজনরা। আর সন্তানকে শেষ বিদায় জানানোর সময়ে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার কান্নায় চারপাশের পরিবেশ যেন আরও ভারি হয়ে ওঠে।
নিহত পলাশের মা শিউলী বেগম বলেন, পলাশ আমার ছোটছেলে। যখন যে কাজ পায় তখন সেই কাজ করে। সে প্রায়ই ইজিবাইক চালত। রোববার মাগরিবের নামাজের পরপর পলাশ বাড়ি থেকে জামাকাপড় পড়ে বাড়ি থেকে বের হয়।
এ যাওয়া যে তার শেষ যাত্রা তা তিনি কল্পনা করতে পারেনি। পলাশকে ফোন করে কে যেন বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। তার নাম তিনি বলতে পারেননি। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তার বন্ধুরা তার আহত হওয়ার খবর পলাশের বাবাকে দিলে আমারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যাই। আমার ছেলে এমন কোন অপরাধ করেনি যে তাকে এভাবে খুন হতে হবে। এ হত্যার বিচার আমি মানুষের কাছে দিবনা। এর বিচার আল্লাহ করবেন।
নিহত পলাশের বাবা আ. হামিদ খান বলেন, তার ছেলের সাথে কারও কোন বিরোধ নেই। বিরোধ থাকলে আমি ছেলেকে তার হাতে তুলে দিতাম শাসন করার জন্য। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নগরীর দোলখোলা মতলেবের মোড়ে আনা হয় মরদেহ। তার মরদেহ এক নজর দেখার জন্য ওই বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন। আছরের নামাজ শেষে পলাশের মরদেহ নিরালা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানতে চাইলে খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, পলাশের মরদেহ দাফনের পর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা আছে। এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কয়েকজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। সংখ্যা জানতে চাইলে পরবর্তীতে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/ টিএ