প্রায় ১৭ বছর আগে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছিল তার স্মৃতিচারণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বললেন, তৎকালীন সরকারের সহায়তা ছাড়া এমন হামলা সম্ভব ছিল না।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার সকালে ২১ আগস্ট বোমা হামলার দিন স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সেদিনের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটার পর একটা গ্রেনেড। আমি দেখলাম রক্ত। তিনটা ফোটার পর কয়েক সেকেন্ড, তারপর আবার। মনে হচ্ছে শেষ নেই। এ যেন কেয়ামতের মতো।
‘আল্লাহ কীভাবে যেন হাতে তুলে বাঁচাল। আওয়াজে যা হলো, একটা কানে আমি শুনতে পাইনি। ট্রাকে একটা টেবিল দেয়া হয়েছিল। সাধারণত টেবিল থাকে না, ওই দিন ছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেখলাম হানিফ ভাই রক্তাক্ত। ওনার ছেলে খোকনসহ প্রত্যেকে আহত। যখন আমি গাড়িতে উঠতে যাব, দরজা খুলে মাহবুব দাঁড়ানো। তখনই গুলি হলো। মাহবুব মারা গেলো। গাড়ি একটানে চালিয়ে নিয়ে আসলো। আহত হয়ে মানুষ যখন ছটফট করছে, পুলিশ এসে লাঠি চার্জ করল। টিয়ারগ্যাস মারতে শুরু করল। যেখানে এরকম ঘটনায় পুলিশ এগিয়ে আসে সাহায্যে, সেখানে দূর থেকে যারা ছুটে আসছে, তাদের বাধা দেয়া হলো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতা না থাকলে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে না। আমার যে ড্রাইভার ছিল মতিন, সাহসী ছিল, সুধাসদনে আসার পরই গাড়িটা বসে গেল। রেহানা আমাকে দেখে চিৎকার। ওখানে দাঁড়িয়েই কে কোথায় তা খোঁজ নিতে শুরু করি।
‘সবচেয়ে দুর্ভাগ্য সেদিন বিএনপি মাইন্ডের কোনো ডাক্তারই ঢাকা মেডিক্যালে ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (পিজি হাসপাতাল) কোনো আহতকে ঢুকতেই দেয়া হয়নি। আর ঢাকা মেডিক্যালে কোনো বিএনপির ডাক্তার চিকিৎসা দেয়নি। আমাদের মাইন্ডের যারা তারা ছুটে এসে চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করে।’
তিনি বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, এটা কিসের গণতন্ত্র। একটা প্রকাশ্য জনসভায় কীভাবে আর্জেস গ্রেনেড মারতে পারে?
‘একজন আর্মি অফিসার যখন পড়ে থাকা একটা গ্রেনেডটা নিয়ে বলল, এটা আলামত হিসেবে রাখতে হবে। তাকে ধমক দেয়া হলো। বিস্ফোরণ স্থান ধুয়ে মুছে সব পরিষ্কার করা হলো। কোনো আলামত তারা রাখতে চায়নি।’
খুলনা গেজেট/এনএম