খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সিলেট-সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৬ জনের মৃত্যু
  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২২১
  ডিসেম্বরের মধ্যে সচিবালয়কে প্লাস্টিক মুক্ত করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

তেরখাদায় সুদ কারবারিদের দৌরাত্ম , নিঃস্ব হচ্ছে  মানুষ

রাসেল আহমেদ, তেরখাদা

তেরখাদা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চলছে রমরমা সুদের কারবার। চড়া সুদে টাকা খাটিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সুদ কারবারিরা। তাদের দৌরাত্ম্য উপজেলার এক শ্রেণির মানুষ দিন দিন নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ফুলে ফেফে বড় হচ্ছে আরেক শ্রেণির মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সুদ কারবারিরা এমন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সুদখোরদের তালিকা তৈরী ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি সচেতন এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন ,উপজেলার জয়সেনা, সাহাপাড়া, কাচিকাটা তেরখাদা, বারাসাত, নাচুনিয়া, পাতলা, সাচিয়াদাহ, শেখপুরা, আজগড়া, কোলাপাঠগাতী, মধুপুর, পানতিতাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দু-শতাধিক ব্যক্তি সুদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অধিকাংশই স্বর্ণ ব্যবসায়ী। এ ব্যবসার আড়ালে অধিকাংশ স্বর্ণ ব্যবসায়ী জমজমাট আকারে সুদ ব্যবসা চালিয়ে গাড়ি-বাড়ি সহ লক্ষ লক্ষ টাকা মালিক বনে যাচ্ছে। এছাড়া মুদি,দর্জি, চাল ও কাপড় ব্যবসায়ীরাও সুদকারবারের সাথে জড়িত। অফিস আদালতে স্বল্প বেতনে কাজ করা মানুষ এবং সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চড়া সুদের ফাঁদে পড়েন। সুদকারারি অধিক মুনাফায় টাকা ধার দেন এবং মাসের পর মাস এর সুদ নিয়ে থাকেন। একজন ঋণ গ্রহীতা আসল টাকার দ্বিগুণ-তিনগুন টাকা পরিশোধ করেও দেনা মুক্ত হতে পারে না। সুদের টাকা পরিশোধ করতে অনেকেই সহায় সম্বল বিক্রি করে পথে বসেছে। উপজেলা সদরের তেরখাদা সুপার মার্কেটের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী সুদ কারবারিদের সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। অনেকে সুদকারবারিদের খপ্পরে পড়ে আত্মহত্যাও করেছেন। আবার অনেকে সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে সহায় সম্বল বিক্রি করে দেশত্যাগ করেছেন।

উপজেলার হাড়িখালী এলাকার ইজিবাইক চালক রুস্তম মোল্যা বলেন, আমি এলাকার এক সুদি কারবারির কাছ থেকে টাকা সুদে নিয়েছিলাম। কিন্তু সমস্যার কারনে সুদের টাকা বাকি পড়ায় আমার জমিজমা ও বসতভিটা দখল করতে চলে আসে এবং আমার বসতঘরের তালা মেরে দেয়। পরে থানা পুলিশের সহায়তায় ঘরে উঠতে পেরেছিলাম। শুধু রুস্তম মোল্যাই নয় তার মতই অনেক মানুষ ভুক্তভোগী।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ঋণ গ্রহণকারী স্বল্প বেতনের বেশ কয়েকজন কর্মচারী বলেন, সাংসারিক প্রয়োজনে তারা চেকে অগ্রিম স্বাক্ষর দিয়ে সুদ কারবারদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় টাকা নেয়। আবার অনেকে স্বর্ণালংকার রেখে বা বাড়ির দলিল ও সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে টাকা নেয়। অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালী সুদখোর তাদের কারবার নির্বিঘ্নে চালাতে নিজ নিজ এলাকার দালাল, ক্যাডার ও সন্ত্রাসীদের মাসোহারা দিয়ে থাকে। তবে প্রভাবশালীদের মত অন্যান্য সুদে ব্যবসায়ীরা একই প্রথা অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ।সুদ কারবারিরা কর ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে রাতারাতি লাখোপতি বনে যাচ্ছে। এলাকার হত দরিদ্র সাধারন মানুষ এদের নির্মম নির্যাতনের স্বীকার। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে সুদ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।

এ বিষয়ে খুলনা গেজেটের সাথে কথা হয় থানার অফিসার ইনচার্জ (চলতি দায়িত্ব) পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত জি এম ইমদাদুল হক। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!