খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩২১

তেরখাদায় মাদকে ঝুঁকছে কিশোর-যুবক, দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা

রাসেল আহমেদ,তেরখাদা

তেরখাদা উপজেলায় এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় মাদক; ‘ওপেন সিক্রেট’ মাদক সেবনের যতসব উপকরণ। মাদক ব্যবসা ও সেবন যেন উৎসবের মতোই দৃশ্যত্ব। প্রত্যন্ত এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে জীবনঘাতি মাদকের নীল ছোবল। জানা গেছে, থানা পুলিশের দিবারাত টহল দৃশ্যমান। থানা এলাকায় অবস্থিত ৪টি পুলিশ ক্যাম্পে দিবাকালীন পুলিশের তৎপরতা দেখা গেলেও জনবল সংকট সহ যানবাহন ব্যবস্থা না থাকায় ক্যাম্প এলাকায় রাত্রিকালীন রণপাহারা, টহল ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান হচ্ছে না। ফলে থানা পুলিশ পুরোপুরি সক্রিয় না হওয়ার সুযোগে মাদক সিন্ডিকেট অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ফ্রি স্টাইলে চলছে ইয়াবা, গাঁজা সেবন ও বিকিকিনি। ফলে মাদক বিক্রেতারা যুব সমাজকে ধ্বংসের দার প্রান্তে দাড় করিয়েছে। অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছে। মরন নেশা ইয়াবায় আসক্ত হওয়ার কারণে ইভটিজিং, চুরি, খুনসহ নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখিন এলাকাবাসী।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, রাত নামলেই এখন তেরখাদা উপজেলার কোথাও না কোথাও ঘটছে চুরির ঘটনা। খোয়া যাচ্ছে বাসাবাড়ির মালামাল আর কৃষকের গবাদিপশু। চোরেরা হানা দিচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। চোরের এমন উপদ্রবে আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে। গত শুক্রবার দিন দুপুরে উপজেলার কাটেংগা বাজারে লাল মাহমুদ স্টোরের ক্যাশ বাক্সর তালা ভেঙে এক লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা চুরি হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার নেবুদিয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আরিফ মুন্সির ট্রাকের ব্যাটারী চুরি হয়। এর কয়েকদিন আগে উপজেলার পশ্চিমপাড়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য শওকত মোল্লার ট্রাকের দুটো ব্যাটারি চুরি হয়। এর দু’দিন আগে ইখড়ি এলাকা থেকে আমিন ফকিরের ট্রাকের ব্যাটারীও চুরি হয়েছে।গত ১৫ আগস্ট রাতে উপজেলার পশ্চিম কাটেংগা বরইতলা বাজারে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম ফরিদ আহমেদের আরাফাত রাইস মিলের তালা ভেঙ্গে মোটরসহ অন্যান্য মালামাল চুরি হয়েছে।

এদিকে আদমপুর,আদালাতপুর এলাকার ইমান উদ্দিন,ইলিয়াস ফকির,সোহেল শেখ ও শহীদ খলিফাসহ অনেকের হাঁস,মুরগি,ঘেরের মাছ, নৌকা ও মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় তেরখাদাবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়, অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত জনপদের নামে পরিচিতি তেরখাদা উপজেলার মতো অনুন্নত এলাকায় মানুষ নেশার জগতে পর্দাপন করায় শত শত পরিবার ধ্বংসে নিপাতিত হতে চলেছে।এছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকার মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজন এদের ভয়ে থাকে আতঙ্কিত।নেশাখোররা অর্থাভাবে নিরব চাঁদাবাজিও করে। উপজেলার বিভিন্ন ধনাঢ্য ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা নেশাগ্রস্তদের কাছে নিরব চাঁদাবাজীর শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, অনেকে ভয়ে মুখ খুলছে না।

উপজেলার যেসব স্থানে ইয়াবা, গাজা বিক্রি ও সেবন চলছে তা এলাকাবাসী সূত্রে প্রাপ্ত স্পটগুলো হলো উপজেলা সদরের কাচিকাটা, হাতিশুড়া, তেরখাদা দক্ষিণপাড়া- পশ্চিমপাড়া, আটলিয়া, জয়সেনা, পানতিতা, রামমাঝি, সাচিয়াদাহ এলাকার পদ্মবিলা, ইন্দুহাটি, নলিয়ারচর, পাতলা, নাচুনিয়া, ছাগলাদাহ এলাকার বাজারের পূর্বে, মসুন্দিয়া বাজার, ধানখালী, নব কুশলা, ধানখালী প্রাথমিক স্কুলের পাশে, পহরডাঙ্গা বাজার, নেবুদিয়া স্কুলের পাশে, ভেড়ি বাধের বাশে, বারাসাত হাইস্কুলের পাশে, হরিদাসবাটি, আবুল বাজার, বরইতলা বাজার, পশ্চিম কাটেংগা, ইখড়ি গরুর হাটের আশপাশে, দশভাইয়া, হাড়িখালীর মোড়, হাড়িখালী আবাসন সংলগ্ন এলাকা,আজগড়ার শেখপুরা বাজারের পূর্ব পাশে,আবাসন সংলগ্ন এলাকা, আনন্দনগর দাসপাড়া, কাটাখাল,আমতলার মোড়,কালিনগর, শ্রীপুর,আনন্দবাজার, আজগড়া বটতলা,আজগড়া বড় মন্দিরের পাশে, শেখপুরা বাজারের আশপাশের দোকানে, কোলা বাজারের আশপাশের এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বর্তমানে মাদকের শীর্ষ আইটেম ইয়াবার ব্যবসা অভিনব পদ্ধতিতে চলছে।

তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (চলতি দায়িত্ব) পুলিশ পরিদর্শক জি এম ইমদাদুল হক বলেন, পুলিশ নতুন ধারায় কাজ করছে। এজন্য পুলিশকে একটু সময় দেওয়া দরকার। অচিরেই পুলিশ মাঠে সক্রিয় হবে। মাদক নির্মূলে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!