তেরখাদা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না কৃষক। বোরো ফসল কেটে গোলায় তোলার সময় কৃষকের অর্থনৈতিক সংকটকে কাজে লাগিয়ে পানির দরে ধান সংগ্রহ করছে মজুতদার ও ফড়িয়াদের একটি সিন্ডিকেট। কোনো প্রকার বাঁধা-নিষেধ না থাকায় স্থানীয় মুনাফাখোরদের যোগসাজশে চলছে কম দামে বোরো ধান কেনার মহোৎসব।
ফসল ঘরে তোলার আগেই দাদন ও কিস্তির টাকার জন্য মাঠেই হাজির সুদখোর মহাজন ও এনজিও কর্মীরা। একই সঙ্গে চাষিদের এমন অর্থনৈতিক সংকটকে কাজে লাগিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভিড় করছেন মধ্যস্বত্বভোগী মজুতদার ও ফড়িয়া সিন্ডিকেটের লোকজন। তাই খরচ ও ঋণ মেটাতে নতুন ধান মাঠ থেকেই অনেক চাষি সাড়ে ৯শ থেকে এক হাজার টাকা মন দরে সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ তাদের মনপ্রতি উৎপাদন খরচ ৯শ টাকারও উপরে।
উপজেলার জয়সেনা এলাকার বোরো চাষি জলিল বিশ্বাস জানান, সুদের ওপর টাকা নিয়ে তিনি এবার চার বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে বাম্পার। অথচ এ ফসল ঘরে তোলার আগেই মাঠে ধানের ক্ষেতে এসে টাকার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন মহাজন। তার টাকা পরিশোধ করতে ৯শ টাকা মন দরে অনেক ধান বিক্রি করতে হয়েছে ফড়িয়াদের কাছে।
উপজেলা সদরের চাল ব্যবসায়ী জুবায়ের জানান, তার জানা মতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দিনে রাতেই নতুন বোরো ধান বোঝাই অসংখ্য পরিবহণ বিভিন্ন অঞ্চলের অটো রাইস মিলে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষকদলের আহবায়ক রাজু চৌধুরীর সঙ্গে কথা হলে তিনিও ট্রাকে ট্রাকে ধান বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এ সময় তিনি জানান, কোনো বাধা নিষেধ না থাকায় বোরো চাষিদের অর্থ সংকটকে কাজে লাগিয়ে সিন্ডিকেট ধান নিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি বরাবরই অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে বিরূপ প্রভাব ফেললেও কিছু করার থাকে না।
এভাবে মজুতদার-ফড়িয়া সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে ট্রাকে নতুন বোরো ফসল বাইরে চলে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না-এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক পূরবী রানী বালা বলেন, এ বিষয়ে আগামীকাল উপজেলা পরিষদের মিটিং আছে এরপর ধান চাল ক্রয় শুরু হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম