তেরখাদা উপজেলার বিজয়নগর এলাকার কলাবাগান থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম সাখিরণ বেগম ময়না (৪০)। দুই বছর প্রবাস জীবন থেকে পাঠানো অর্থ শশুরবাড়ী ফিরে স্বামীর কাছে ফেরত চাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে।
সে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার হরিসপুর গ্রামের রহিম সরদারের ছেলে মো. আনিচ সরদারের স্ত্রী।
গত (২৩ মার্চ) সকালে তেরখাদা উপজেলার বিজয় নগর এলাকার ওসমান মিয়ার কলাবাগান থেকে ময়নার লাশটি উদ্ধার করেছিল থানা পুলিশ।পরে প্রযুক্তি ব্যবহারে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এরমধ্যে হত্যা মামলায় নড়াইলের কালিয়া উপজেলার হাড়িডাঙ্গা গ্রামের মৃত রহিম সরদারের ছেলে রনিচ সরদার (৪০) ও আকছের (৫৫) এবং আনিচ সরদারের দ্বিতীয় স্ত্রী আঙ্গুরা বেগমকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া অন্য তিনজনকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আনিচ সরদারের সাথে বিয়ের পর থেকেই সাখিরন বেগম (ময়না) খুলনায় বসবাস করতেন। অপরদিকে আনিচ সরদার তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে হরিসপুর বসবাস করেন। আনিস সরদার দ্বিতীয় বিবাহ করার পর সাখিরন বেগম ময়না বিদেশে চলে যান। দুই বছর প্রবাসে থাকাকালীন সাখিরন বেগমের আয়ের সব টাকা স্বামী আনিচ সরদারের কাছে পাঠিয়েছিলেন। সাখিরন বেগম দেশে ফিরে তার পাঠানো টাকা স্বামী আনিচের কাছে ফেরত চাইলে বাঁধে বিপত্তি। সর্বশেষ গত ২২ মার্চ বিকেলে সাখিরন বেগম ময়না তার পাওনা টাকা চাইতে স্বামীর বাড়ি হরিশপুর গ্রামে আসে। টাকা চাইলে সাখিরনের উপর শুরু হয় অমানসিক নির্যাতন। আনিচ সরদার তার ভাই রনিচ সরদার ও তার পরিবারের লোকজন সাখিরন বেগমকে বেদম মারপিট করে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করতে নড়াইলের সীমানা ছাড়িয়ে তেরখাদা উপজেলার বিজয়নগর এলাকায় ওসমান মিয়ার কলাবাগানের মধ্যে ফেলে রেখে যায়। সকালে এলাকাবাসী লাশ দেখে পুলিশকে খবর দিলে সাখিরনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় তেরখাদা থানায় হত্যা মামলা হয়েছে (যার নং ১৩, ২৩-০৩-২০২৫ইং)।
এ বিষয়ে তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান জানান,আসামিরা দুর্দান্ত প্রকৃতির। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় নানাবিধ অপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগ রয়েছে। হত্যার প্রধান আসামি নিহত ময়নার স্বামী আনিচ সরদারকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
খুলনা গেজেট/এএজে